যুক্তরাজ্যের উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনার কর ফাঁকির অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি নিজেই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে পদ ছাড়েন। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন রেইনারের বিরুদ্ধে মন্ত্রিসভার আচরণবিধি ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত আসে।
অভিযোগ উঠেছিল, রেইনার প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৫৪ হাজার ডলার) কর ফাঁকি দিয়েছেন। শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাকে পূর্ণ সমর্থন দিলেও শেষ পর্যন্ত তাকে মন্ত্রিসভা ছাড়তেই হলো। রেইনারের বিদায় স্টারমারের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্টারমারকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে রেইনার বলেন, ‘নতুন বাড়ি কেনার পর করসংক্রান্ত বিষয়ে আমি কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিইনি। এ কারণে আমি অনুতপ্ত এবং এর পুরো দায়ভার নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তের ফলাফল এবং আমার পরিবারের ওপর এর প্রভাব বিবেচনায় আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি শুধু উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ নয়, লেবার পার্টির উপনেতা ও মন্ত্রিসভার অন্যান্য দায়িত্ব থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন।
রেইনারের পদত্যাগের পর স্টারমার তার মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কমন্সের নেতা লুসি পাওয়েল ও স্কটল্যান্ড সচিব ইয়ান মারেও পদত্যাগ করেছেন।
এ ঘটনায় লেবার পার্টির ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, লেবার পার্টি পপুলিস্ট দল রিফর্ম ইউকে-এর চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। দলটির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দাতাদের কাছ থেকে দামি পোশাক ও কনসার্টের টিকিট নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
রেইনারের পদত্যাগ লেবার পার্টির জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ, শ্রমজীবী পরিবারের একজন কিশোরী মা থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে উঠে আসা রেইনার ছিলেন দলের ডান ও বামপন্থি অংশের মধ্যে সেতুবন্ধন। এমনকি জনপ্রিয়তায় তিনি স্টারমারের চেয়েও এগিয়ে ছিলেন।
এখন পর্যন্ত স্টারমারের সরকার থেকে আটজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, যাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ছিল অনিয়মের অভিযোগ। ১৯৭৯ সালের পর ব্রিটিশ রাজনীতিতে এটি সরকারের শুরুর সময়েই সবচেয়ে বেশি মন্ত্রী হারানোর ঘটনা, যা বরিস জনসনের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।