ময়মনসিংহে নতুন বাসার খোঁজে থাকা অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজমুল হাসান ফেসবুকে ‘টু-লেট’ বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের পর বাসাটি দেখতে গিয়ে তাকে আটকে রেখে মারধর করা হয় এবং মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় চক্রটি। পরে ভয় দেখিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাজমুল হাসান ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের ছাত্র। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভূরারবাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে তিনি। বর্তমানে মীরবাড়ি এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করেন, কিন্তু ট্রেনের শব্দে সমস্যা হওয়ায় নতুন বাসার সন্ধান করছিলেন।
নাজমুল জানান, ফেসবুকে ‘টু-লেট ময়মনসিংহ’ গ্রুপে ব্যাচেলরদের জন্য ১ রুমের সাবলেট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। ফোনে বলা হয়, একটি দুই কক্ষের বাসায় এক কক্ষে স্বামী-স্ত্রী থাকেন আরেকটি কক্ষ সাবলেট ভাড়া দেওয়া হবে। এরপর বাসাটি দেখতে গিয়ে তাকে গুলকিবাড়ীর ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে তার সঙ্গে চারজন নারী ও চারজন যুবক উপস্থিত হন। অস্ত্রের মুখে তাকে আটকে রেখে মারধর করা হয় এবং মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়া হয়। এ ছাড়া লিখিত জবানবন্দি নেয়া হয়, যেন মনে হয় সে খারাপ কাজ করতে এসে আটকা পড়েছে। পরে তাকে একটি এটিএম বুথ থেকে ২০ হাজার টাকা তুলে এনে হেলথ অফিসারের গলিতে নামিয়ে দেয় তারা। তারা হুমকি দেয়, কেউ বিষয়টি জানালে তার ক্ষতি হবে।
পুলিশকে জানানোয় তদন্ত শুরু হয়। অভিযান চালিয়ে দুই নারী সদস্য সাদিয়া জাহান (২১) ও ফারিয়া আক্তার (১৯)কে আটক করে পুলিশ। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়। সাদিয়া ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আর ফারিয়া তাড়াইল উপজেলার সহিলাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
পুলিশ জানিয়েছে, এই প্রতারণা চক্রে মোট আটজন – চারজন নারী ও চারজন পুরুষ – জড়িত। তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী। আটক দুজনের কাছ থেকে কলেজছাত্রের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করা হয়েছে। বাকি সদস্যদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। আটক দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।