এবারের বিপিএলে প্রথম ৮ ম্যাচের সবগুলো জিতে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছিল রংপুর রাইডার্স। দেশি-বিদেশি তরুণ ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নিয়ে তাদের দলটাই ছিল সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ। তবে প্রথম ৮ ম্যাচের পর হুট করেই ধস নামে রংপুর শিবিরে। শুরুর ৮ ম্যাচ জেতা দলটি হারল টানা পাঁচ ম্যাচ।
গ্রুপ পর্বের শেষ চার ম্যাচে হেরে কোয়ালিফায়ারে ওঠার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার পর এবার এলিমিনেটর ম্যাচেও হারল নুরুল হাসান সোহানের দল। টিম ডেভিড, আন্দ্রে রাসেলের মতো টি-টোয়েন্টির বিশ্বসেরা তারকাদের নিয়েও খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে রীতিমতো উড়ে গেছে দলটি। ৯ উইকেটের বড় হারে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দলটি ছিটকে গেল প্লে-অফেই।
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এলিমিনেটর ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে মাত্র ৮৫ রান করে রংপুর। জবাব দিতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে এবং ৫৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় খুলনা। এই জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করল খুলনা। ফরচুন বরিশাল এবং চিটাগং কিংসের ম্যাচে হারা দলের সঙ্গে ওই ম্যাচে মাঠে নামবে খুলনা।
ছোট লক্ষ্যতাড়ায় অবশ্য প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় খুলনা। দলীয় ২ রান অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের উইকেট হারায় দলটি। তবে এরপর আর কোনো বিপদ আসতে দেননি অ্যালেক্স রস এবং নাইম শেখ। দ্বিতীয় উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। আর এই জুটিতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান মিরাজরা।
খুলনার হয়ে ৩৩ বলে ৪৮ রান করেছেন নাইম শেখ। রস অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে। রংপুরের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন আকিফ জাভেদ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে ৩২ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় খুলনা। খুলনার হয়ে দারুণ শুরুটা করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ওভারে বল হাতে নিয়েই জেমস ভিন্স ও সৌম্য সরকারের ভুল বোঝাবুঝিতে মোহাম্মদ নেওয়াজের থ্রোতে শেষের জনকে রানআউট করেন খুলনা দলপতি। দ্বিতীয় ওভারের জন্যও স্পিন আক্রমণই বেছে নেয় তার দল। এবার নাসুম আহমেদের শিকার হন ভিন্স। সকালেই ঢাকায় পা দেওয়া ইংলিশ ওপেনার নাসুমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে নাসুম আবার উইকেট নেন, এবার সরাসরি বোল্ড হন মেহেদী হাসান। সাইফ হাসানকে শিকার করেন মিরাজ, সাইফউদ্দিন এলবিডব্লিউ হন হাসান মাহমুদের বলে। এদের কেউই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। ভিন্সের মতো অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিডও আজ সকালেই ঢাকায় পৌঁছেন। টি-টোয়েন্টির বড় তারকা পরিচয় পাওয়া এই ব্যাটারও রংপুরের ধসে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। ৯ বলে তিনিও দুই অঙ্ক স্পর্শ করার আগে নাসুম তাকে শিকারে পরিণত করেন।
৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলে আন্দ্রে রাসেল থাকলে তার ওপর ভরসা করাই স্বাভাবিক। অতীতে এমন অবস্থা থেকে রাসেলকে অনেকবারই বড় স্কোর করতে দেখা গেছে। কিন্তু ব্যাট হাতে আজকের দিনটা তার ছিল না। অন্যপ্রান্তে নুরুল হাসান সোহানের একটু খেটেখুটে খেলার চেষ্টা করার মধ্যেই নেওয়াজের বলে আউট হন ক্যারিবীয় তারকা। তখন দলীয় রান ৫০।
রাকিবুল হাসান করেন ১ রান। সোহান দলকে ৫২ রানে রেখে আউট হন। ২৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। ফলে ৫০-এর আশেপাশেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয় রংপুরের। কিন্তু আকিফ জাভেদের ৪ চার ও ২ ছয়ের মারে ৮০ পেরোতে সক্ষম হয়। আকিফের উইকেট নেন মুশফিক হাসান। খুলনার হয়ে ১০ রানে মিরাজ ও ১৬ রানে নাসুম সমান ৩টি করে উইকেট নেন।