যুক্তরাজ্যে অবৈধ মাংসের বাণিজ্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে বলে সরকারের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ডোভার বন্দর থেকে প্রায় প্রতিদিনই অবৈধ মাংস পণ্য জব্দ করা হচ্ছে, এবং সরকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী নতুন সীমান্ত ব্যবস্থা এই অবৈধ প্রবাহকে আটকাতে যথেষ্ট কার্যকর নয়।
একজন সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী সীমান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার দুর্বলতা যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী রোগবাহী মাংসের প্রবাহকে রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ডোভার বন্দর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান লুসি মানজানো জানান, অবৈধ মাংস এখন যুক্তরাজ্যের প্রায় প্রতিটি হাই স্ট্রিটে উপলব্ধ হয়ে গেছে। তিনি সতর্ক করেছেন যে, এসব মাংস যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে প্রবাহিত হয়নি এবং এর ফলে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।
ডোভার বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন যে, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে বাণিজ্যিক যানবাহনগুলোর পরীক্ষা সেভিংটনে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে কার্যকর তদারকি ব্যবস্থা নেই। এতে অনেক লরি পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে, যার ফলে অবৈধ মাংস বাজারে চলে আসছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এই পরীক্ষণ ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর এবং তাদের লক্ষ্য হলো যুক্তরাজ্যের জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তবে বাস্তবে, সরকারের তদারকি ব্যবস্থায় অনুপযুক্ততা রয়েছে এবং এর ফলে অবৈধ মাংস বাজারে আসছে।
লুসি মানজানো জানিয়েছেন, সরকার সেভিংটনে একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা থাকা সত্ত্বেও সেটি ব্যবহার করছে না, কারণ এতে সীমান্তে যানজট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “এটি কোনোভাবেই জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর নয়।”
ডোভার বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কৃষি বিভাগও এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তারা এখনো একটি কার্যকর পরীক্ষা পদ্ধতি গ্রহণের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, অবৈধ মাংসের বাণিজ্য প্রতিরোধে কোনও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে, যার ফলে এই ধরনের পণ্যগুলো গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে এবং বাজারে বিপজ্জনক অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।
সরকার ইতোমধ্যে কিছু বিদেশী মাংসের আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তবে সমালোচকরা বলছেন, পরীক্ষার অভাব এবং দুর্বল তদারকির কারণে এই পদক্ষেপগুলি যথেষ্ট কার্যকর হবে না।
সূত্রঃ বিবিসি