যুক্তরাজ্যের নতুন আশ্রয় নীতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারের একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড সতর্ক করে দিয়েছেন, তাড়াহুড়ো করে চালু করা নীতিগুলো ‘উইন্ডরাশ’ ধাঁচের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করছে।
কুপারের ঘোষণা করা নতুন নীতিসমূহ:
-
২০২৬ সাল পর্যন্ত শরণার্থীদের পরিবারের যুক্তরাজ্যে আগমন নিষিদ্ধ।
-
আশ্রয় প্রত্যাখ্যাতদের আপিল আদালতের বদলে ‘সাধারণ নাগরিক প্যানেল’-এর হাতে।
-
হোটেল বাদ দিয়ে গুদাম ও শিল্প এলাকাকে ‘অস্থায়ী আশ্রয়’ হিসেবে ব্যবহার।
এই সিদ্ধান্তগুলো এসেছে এমন এক সময়ে যখন রিফর্ম ইউকে দল সরকারের বিরুদ্ধে ছোট নৌকায় বেড়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসনের পরিসংখ্যান তুলে ধরছে। ফলে কুপারের এসব পদক্ষেপ ‘চাপের মুখে হুড়োহুড়ি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারির ছায়া
অ্যাম্বার রাড বলেন,
“হোম অফিসকে অতীতে তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই উইন্ডরাশ ঘটেছিল। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হবেই।”
📌 উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারিতে (২০১৮) বহু বৈধ অভিবাসীকে বেআইনি বলে চিহ্নিত করে চাকরি, বাসস্থান ও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। অনেকে জোরপূর্বক দেশছাড়া হয়েছিলেন।
সরকারের কড়াকড়ি আরও বাড়ছে
-
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার ডিজিটাল পরিচয়পত্র চালুর কথা ভাবছেন।
-
শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে সতর্কবার্তা: অনুমতি না থাকলে যুক্তরাজ্য ছাড়তে হবে।
-
অবৈধ শ্রমিক ধরতে কর্মস্থলে অভিযান জোরদার।
এসব পদক্ষেপ ২০১৩ সালের ‘গো হোম’ ভ্যান কেলেঙ্কারির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে—যেখানে ভ্যানে করে অভিবাসীদের ফেরত যেতে বলা হয়েছিল।
মতভেদ
শরণার্থী কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন মনে করেন,
“কুপার মানবিকতা ও নিয়ন্ত্রণের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বার্তা জনমনে এক কঠোর, শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করছে।”
অন্যদিকে, রাড বলেন—বর্তমান পরিস্থিতি তার সময়ের চেয়ে অনেক ভিন্ন ও জটিল, কারণ তখন বছরে মাত্র ৩০০ জন ইংলিশ চ্যানেল পার হতো, আর এখন তা একটি বিশাল মানবপাচার শিল্পে পরিণত হয়েছে।