যুক্তরাজ্যে চলতি বছরের গ্রীষ্ম এখন পর্যন্ত রেকর্ড গরমের দিকে এগোচ্ছে। মেট অফিস জানিয়েছে, এবারের মৌসুমের গড় তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ১৬.১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ২০১৮ সালের সর্বোচ্চ গড় ১৫.৭৬ ডিগ্রিকে ছাড়িয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আগস্ট মাসের বাকি দিনগুলোতে যদি তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে না যায়—যার সম্ভাবনা খুবই কম—তবে এটি হবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উষ্ণতম গ্রীষ্ম। মেট অফিসের বিজ্ঞানী এমিলি কার্লিসল বলেন, “প্রাথমিক হিসাব বলছে, ২০২৫ সালের গ্রীষ্ম হবে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্ম।”
জুন ও জুলাই মাসজুড়ে যুক্তরাজ্যে চারটি বড় তাপপ্রবাহ হয়েছে, যার প্রতিটিতেই একাধিক দিন তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের হার ছিল খুবই কম। এর ফলে ইংল্যান্ডে পানির সংকট জাতীয় জরুরি অবস্থায় পরিণত হয়েছে, এবং বিভিন্ন এলাকায় পানি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জলাধার, নদী এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে গেছে।
যদিও এবার চরম মাত্রার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি—সর্বোচ্চ ছিল ৩৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ২০২২ সালের সর্বোচ্চ ৪০.৩ ডিগ্রির চেয়ে অনেক কম—তবুও দীর্ঘ সময় ধরে চলা উষ্ণ আবহাওয়া এবং অস্বাভাবিক গরম রাতগুলো এবারের গ্রীষ্মকে করেছে ব্যতিক্রমধর্মী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বসন্তের শুকনো মাটি, স্থায়ী উচ্চচাপ পরিস্থিতি এবং চারপাশের সমুদ্রের উষ্ণতা এই গরম বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। মেট অফিস জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে এখন প্রতি দশকে গড় তাপমাত্রা প্রায় ০.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বাড়ছে।
এ বছর সাগরে যে তাপপ্রবাহ দেখা গেছে, সেটিও জলবায়ু পরিবর্তনেরই একটি পরিষ্কার ইঙ্গিত। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, যদি এখনই কার্যকর জলবায়ু উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ আবহাওয়া পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান