লন্ডনে প্রায় ৫৮৫,০০০ অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন, যা শহরের মোট জনসংখ্যার প্রতি ১২ জনের একজন। যুক্তরাজ্যের অভিবাসন পরিস্থিতি নিয়ে এই তথ্য উঠে এসেছে টেমস ওয়াটারের এক গোপন প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো যুক্তরাজ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যাদের ৬০ শতাংশের বাস লন্ডনে।
ব্রিটেনের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে ঘাটতি এবং পাবলিক সেবাগুলোর ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে এনএইচএস, স্কুল, এবং আবাসন খাতে এর প্রভাব স্পষ্ট। কালো অর্থনীতিতে অবৈধ অভিবাসীদের জড়িয়ে পড়া এবং খাদ্য সরবরাহকারী চালকের মতো কাজ করার ঘটনাও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, বেশিরভাগ অভিবাসী বৈধ ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর মেয়াদ শেষ হলেও দেশে থেকে গেছেন। চ্যানেল অতিক্রম করে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এ বছরের শুরুতেই ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন এক হাজারের বেশি অভিবাসী।
হোম অফিস জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত ও ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে। গত ছয় মাসে ১৬,৪০০ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংখ্যাগুলো বর্তমান পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই কম এবং সমস্যা মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
ছায়া স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস ফিলপ এ পরিস্থিতিকে “গভীর উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসনের প্রবাহ বন্ধ করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। একইসঙ্গে মিথ্যা মানবাধিকার এবং আশ্রয় দাবির মাধ্যমে অপসারণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টাগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
অন্যদিকে, মাইগ্রেশন ওয়াচের চেয়ারম্যান আল্প মেহমেত বলেছেন, “এত সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীর উপস্থিতি আমাদের কমিউনিটি ও সেবাগুলোকে চাপে ফেলছে। এটি স্থানীয় সংহতি ও সেবা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”
টেমস ওয়াটারের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গবেষণাটি মূলত পানির ব্যবহার বিশ্লেষণের জন্য করা হয়েছিল। তবে এতে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।
এ পরিস্থিতিতে সরকার আরও কঠোরভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্যার প্রকৃত পরিসর বোঝার জন্য আরও স্বচ্ছ ও আধুনিক তথ্য ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।