‘বাচ্চা ঠিকমতো খাবার খায় না’–এ অভিযোগ অনেক মা-বাবারই। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ না থাকলেও শিশু কেন খেতে চায় না, তার কারণ খুঁজে বের করেন না অনেকেই। পুষ্টিকর খাবারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েই শিশু তার পেট ভরিয়ে রাখতে পছন্দ করে। এ অবস্থায় মা-বাবার করণীয় কী? আয়ুর্বেদশাস্ত্রে খুঁজে পাওয়া যায় এ সমস্যার সমাধান। আসুন, তা জেনে নিই আজকের আয়োজনে।
শুরু থেকেই শিশুর খাবারের ব্যাপারে আপনাকে একটি সঠিক পরিকল্পনা বা নিয়ম মেনে চলতে হবে। সন্তানকে দৈনিক পাঁচবার খেতে দিতে হবে। এ খাবার কখনো আলাদা করে খাওয়াবেন না। আপনার সন্তানকে পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে বসে খাবার গ্রহণ করতে দিন। এটি আপনার শিশুর রুচি ও খাবার খাওয়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেবে।
শিশুর খাবারে আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে খাওয়াতে পারেন বিশেষ কিছু খাবারও। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী এ খাবারগুলো হলো–
কুমড়ার বীজ: কুমড়ার বীজ ফেলে না দিয়ে তা শুকিয়ে সসপ্যানে ভেজে সন্তানকে খাওয়াতে পারেন। এ বীজ কোনো কিছু খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া এ বীজ হজমপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
গাজর: গাজরের উপকারিতা অসংখ্য। এটি ক্ষুধা বাড়ানোর প্রবণতার মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করেছে। এটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা অনেক পুরোনো কৌশল। খাবারের প্রয়োজনে প্রায়ই ক্ষুধা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রায় ৩০ মিনিট আগে বাচ্চাকে গাজর খেতে দিন।
আদা ও তুলসী: ক্ষুধা বৃদ্ধির সঙ্গে একাধিক অসুখ নিয়ন্ত্রণ করে আদা ও তুলসী। বাড়িয়ে তোলে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও। তাই সন্তানকে নিয়মিত আদার রস তুলসীর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
তেঁতুল: অগ্নিমান্দ্য দূর করে ক্ষুধা বাড়ায় তেঁতুল। তাই শিশুর ডায়েটে তেঁতুল বা এর চাটনি রাখতে পারেন।
আমলকী: আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। প্রতিদিন খালি পেটে আমলকী খেলে খিদা বাড়ে। এর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও জোরদার হয়।
দারুচিনি: রান্নার কাজে ব্যবহৃত হলেও এ মসলা শিশুদের খিদে বাড়িয়ে তুলতে পারে। দারুচিনি পিষে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে দিন বাচ্চাকে। এতে দুধের স্বাদ ও শিশুর খিদে দুই-ই বাড়বে।
লেবু: লেবু দ্রুত ক্ষুধা বাড়াতে পারে। তাই আপনি আপনার সন্তানের জন্য লেবুপানি বা লেবুর রস তৈরি করতে পারেন। এ রস পান করার পর শিগগিরই বাচ্চার পাচক সিস্টেম সক্রিয় হওয়া শুরু হবে এবং সে খাবার চাইবে।
দই: পাচকতন্ত্রকে ভালো করে উদ্দীপক করে তোলে দই। তাই নিয়মিত শিশুর খাবারে রাখতে পারেন দই। এই দই ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
অষ্টচূর্ণম: এটি একধরনের অক্টা হার্বাল আয়ুর্বেদীয় গুঁড়ো, যা বেশ জনপ্রিয়। শিশুর ক্ষুধা বাড়িয়ে তুলতে ভাত ও ঘি দিয়ে এই গুঁড়ো মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে পারেন।