ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের একমাত্র ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পিয়ার, ব্যারোনেস পলা উদ্দিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছে সংসদের আচরণবিধি কমিটি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সংসদের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে ‘অযথা আক্রমণাত্মক’ আচরণ করায় পলা উদ্দিন আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। কমিটি তাকে লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়ার সুপারিশ করেছে।
অভিযোগ অনুসারে, পলা উদ্দিনের এক অতিথিকে ভিজিটর প্রবেশপথ ব্যবহার করতে অনুরোধ করায় তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তাকে “অযোগ্য বোকা” ও “অযোগ্য শ্বেতাঙ্গ বোকা” বলে মন্তব্য করেন। যদিও পলা উদ্দিন এই ধরনের ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবু হাউস অব লর্ডসের স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনার অভিযোগটি যথাযথ বলে রায় দিয়েছেন এবং তার আচরণকে “হয়রানি ও অপমানজনক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাটির মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম হলেও, এটি একজন লর্ডের জন্য প্রত্যাশিত আচরণ নয়। ২৩ আগস্ট পর্যন্ত পলা উদ্দিন এ বিষয়ে কোনও আপিল করেননি।
এর আগে ২০১০ সালে একটি ভাতা কেলেঙ্কারিতেও জড়ান তিনি। তদন্তে দেখা যায়, হাউস অব লর্ডসের সদস্য হিসেবে তিনি ১ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ডের ভাতা অন্যায়ভাবে দাবি করেছিলেন। তিনি কেন্টের মেডস্টোনে থাকা একটি খালি ফ্ল্যাটকে তার প্রধান বাসস্থান বলে দাবি করেছিলেন, যদিও প্রকৃতপক্ষে তিনি পূর্ব লন্ডনে বসবাস করতেন — যা পার্লামেন্ট থেকে মাত্র চার মাইল দূরে।
তদন্তে এই দাবিকে “ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্রান্ত” এবং “ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে উপস্থাপন” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর জেরে তাকে ২০১২ সাল পর্যন্ত হাউস অব লর্ডস থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য করা হয়।
বাংলাদেশের রাজশাহীতে জন্ম নেওয়া মঞ্জিলা পলা উদ্দিন শিশুকালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং পূর্ব লন্ডনে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে কাউন্সিলর হন। নারীর অধিকার ও প্রতিবন্ধী সেবায় তার অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে ১৯৯৮ সালে তাকে হাউস অব লর্ডসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি ছিলেন হাউস অব লর্ডসে প্রথম মুসলিম ও বাংলাদেশি নারী সদস্য।