ইসলামে ধর্ষণ অত্যন্ত জঘন্য ও মারাত্মক একটি গুনাহের কাজ। এটাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। ধর্ষণ মানবতার বিরুদ্ধে একটি ভয়াবহ অপরাধ, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ও নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটায়।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে ১০০ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (সুরা নুর)
রসুল সা. বলেছেন, অবিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে ১০০ বেত্রাঘাত ও রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড) (সহিহ মুসলিম)
নারী পুরুষ স্বেচ্ছায় ব্যভিচারে লিপ্ত হলে উভয়কেই শাস্তি পেতে হবে। তবে ইসলামে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির জন্য কোনো শাস্তির বিধান নেই, বরং শুধু ধর্ষকই শাস্তিযোগ্য অপরাধী। আইন অনুযায়ী, ইসলামে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে, বিশেষ করে যদি ধর্ষক বিবাহিত হয়। অবিবাহিত হলে তাকে একশ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন দেওয়া হতে পারে।
ইসলামি আইনশাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে চারজন সাক্ষীর উপস্থিতি প্রয়োজন, তবে আধুনিক প্রযুক্তি যেমন ডিএনএ টেস্টও প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলাম নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেয়। পাশাপাশি সমাজে সতর্কতা ও নৈতিকতা বৃদ্ধির জন্য ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ ও তার অনুসরণও অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশের মতো দেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অপরাধীদের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধর্ষণের শাস্তি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়িত হলে সমাজে এক ধরনের আতঙ্ক ও ভয় সৃষ্টি হবে, যা অপরাধীদের তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে। দ্রুত শাস্তি কার্যকর হলে, এটি অপরাধীদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা হতে পারে যে, সমাজে ধর্ষকের কোন স্থান নেই।
বর্তমান সমাজে পোশাকের শালীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলাম পুরুষ-নারী একে অপরের পোশাক পরিধানের অনুমতি দেয় না। কারণ এটি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে স্বল্প পোশাক বা অশ্লীলতা ও যৌনতাকে উসকে দেয় এমন পোশাকও নিষিদ্ধ করেছে ইসলাম। এর মাধ্যমে ইসলামের উদ্দেশ্য হলো একটি শালীন, পবিত্র, সুশৃঙ্খল ও ধর্ষণ মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ ইসলামের ওপর আমল করা তাওফিক দান করুন। আমিন।