রমজানের পবিত্র মাসের বরকতময় রাতে, ইস্ট লন্ডন এবং ব্রিকলেন মসজিদ পরিণত হয়েছে এক বিশাল ইবাদতের ময়দানে। এই মসজিদগুলোর মধ্যে প্রতিদিন মুসল্লিদের জটলা যেন এক নতুন আধ্যাত্মিক পরিবেশ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশিসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত মুসলমানরা একত্রিত হচ্ছেন আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তারাবিহ নামাজে অংশ নিতে।
এ সময়, মিসরসহ অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকে আগত ক্বারীদের সুললিত কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত পরিবেশটিকে এক ভিন্ন আধ্যাত্মিক আবহে ভরে তোলে। ক্বারীদের তেলাওয়াত যেন এক নতুন জীবনের সঞ্চার ঘটায়, যার সুরে মুসল্লিরা স্রষ্টার প্রতি আরও গভীর ভালোবাসা অনুভব করেন। রোজার দীর্ঘ কর্মদিবসের ক্লান্তি সত্ত্বেও, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তারাবিহ নামাজে অংশ নিতে ছুটে আসেন, আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও মাগফিরাত প্রার্থনা করতে।
মসজিদের পরিবেশ প্রতিদিন আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, যেখানে মুসল্লিরা শুধু নামাজই আদায় করেন না, বরং নিজেদের আত্মার পবিত্রতা অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। অনেকেই নামাজে দাঁড়িয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন, চোখে পানি চলে আসে, বিশেষ করে মোনাজাতে কেউ তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চাচ্ছেন, আবার কেউ দেশ, পরিবার এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করছেন। এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি হয় যেখানে প্রত্যেকে নিজেকে আল্লাহর সামনে হাজির মনে করেন।
প্রতি রাতেই মসজিদের ভেতর এবং বাইরের অংশ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়, যা মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করে। মুসল্লিদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়, যাতে সবাই নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে নামাজ আদায়ের সময়, পরিপূর্ণভাবে সবার জন্য জায়গা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করা হয়, যেন কোনো মুসল্লিই বাদ না পড়েন।
প্রবাসের ব্যস্ত জীবন থেকে কিছু মুহূর্তের জন্য বেরিয়ে এসে তারাবিহ নামাজ মুসল্লিদের জন্য কেবল একটি ধর্মীয় আচারই নয়, বরং আত্মিক প্রশান্তির এক অপূর্ব উৎস হয়ে উঠেছে। রোজার পুরো মাসজুড়ে মুসল্লিরা একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে, একসঙ্গে নামাজ আদায় করে এক মহান উদ্দেশ্য অর্জন করেন – আল্লাহর নৈকট্য লাভ।
এই ইবাদত শুধু পৃথিবীজুড়ে মুসলিমদের হৃদয়ে ঈমানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে, বরং তাদের জীবনেও এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করছে।