বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে নারীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে একের পর এক বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে নানা অজুহাতে স্ত্রীদের নির্যাতন করে সম্পর্ক ছিন্ন করার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে।
শুধু প্রতারণা নয়, দুর্নীতির অভিযোগও তাকে ঘিরে আছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বন কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশালের কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ভুক্তভোগী পরিবার ও সুশীল সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযুক্ত কবির হোসেন চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার বাসিন্দা। আগে তিনি ঢাকা, খুলনা, বাকেরগহাট, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। অভিযোগ অনুসারে, তিনি অন্তত ১৬টি বিয়ে করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, কবির হোসেন বিদেশে পড়াশোনা করানো, সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রলোভন, বিমানবালা হওয়ার সুযোগ ও সম্পত্তির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে যৌতুক দাবি, শারীরিক নির্যাতন ও মনোমালিন্যের কারণে সংসার ভেঙে যায়। ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ অন্তত ১৬ নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
সবশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনার খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন কবির হোসেন। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই তিনি স্ত্রীর বাবার বাড়ির অংশ লিখে দেওয়ার দাবি করেন। রাজি না হওয়ায় খাদিজাকে সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেন।
খাদিজা অভিযোগ করেন, তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছে এবং বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় নির্যাতন করেছে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, থানায়, আদালতে এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেয়ার পরেও বিচার পাননি তারা। একবার দাপ্তরিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেও প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় জামিন পেয়ে যান তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দিনভর বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করেন। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের কাছ থেকেও লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। তবে তদন্ত কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। অভিযুক্ত বন কর্মকর্তা কবির হোসেনও বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেছেন।
তার আইনজীবী এনায়েত হোসেন বাচ্চু দাবি করেন, বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে তা ভিত্তিহীন।