চীনের বিরুদ্ধে ‘কার্যকর ব্যবস্থা’ নিতেই ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিভ ব্যানন গণমাধ্যমকে জানান, রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করাই ট্রাম্পের ইউক্রেনকে ‘পরিত্যাগ’ করার মূল উদ্দেশ্য।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে রাশিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের ঢাল হয়ে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভকে সামরিক, অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছিল ওয়াশিংটন। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পরই ইউক্রেনের জন্য দেখা দেয় বিপত্তি।
নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক বলে কটুক্তি করেন। আবার কখনো মার্কিন সাহায্যের বিনিময়ে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের মালিকানা চেয়ে বসেন। এমনকি বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে পুতিনকে বন্ধু আখ্যা দিয়ে তার ভূঁয়সী প্রশংসাও করেন। ট্রাম্পের এমন নীতি নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন, হঠাৎ কেন ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে রাশিয়ার পক্ষ নিচ্ছেন ট্রাম্প?
ট্রাম্পের একজন ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা স্টিভ ব্যানন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, চীনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থানে থাকতেই শি জিনপিং-এর মিত্র পুতিনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে চাচ্ছেন ট্রাম্প। রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করে চীনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।
এক পডকাস্টে ব্যানন অভিযোগ করেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালাচ্ছে। তার ভাষ্যমতে, মার্কিন অভিজাত শ্রেণি চীনের হাতে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব তুলে দিয়েছে, যা এখন সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া রোধ করা সম্ভব নয়। তিনি আরও দাবি করেন, ওয়াশিংটনের সামরিক সক্ষমতাকে সমীহ করে যুদ্ধে জড়াতে চায় না বেইজিং।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মস্কো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি না হলে ট্রাম্প পুতিনকে রাজি করাতে নানা ধরনের চেষ্টা করবেন। ট্রাম্প হয়তো রাশিয়ার জন্য কিছু আর্থিক সুবিধা দিতে পারেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর নিরস্ত্রীকরণ, ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রবেশ ঠেকানো এবং ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ আংশিক অধিকৃত এলাকায় কর্তৃত্ব রাখাসহ পুতিনের নানা দাবি মেনে নিতে পারেন ট্রাম্প।
তবে সবকিছু ইউক্রেন ও ইউরোপের দেশগুলো না-ও মেনে নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।