টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেও তার রাজনীতিতে উত্তেজনা কমছে না। কনজারভেটিভ পার্টি তার এমপি পদ থেকেও পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নেমেছে। হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি পদ থেকে টিউলিপকে সরানোর জন্য দলটি ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে।
ক্যামডেনের কনজারভেটিভ নেতা ডেভিড ডগলাস মন্তব্য করেন, “সবাই ভেবেছিল টিউলিপ একটি চমৎকার মেয়ে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।” এই প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিবার শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপের পরিবারের সংযোগ। ডেইলি মেইল ও অন্যান্য মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ থেকে অর্থ সরিয়ে আনার এবং লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার।
সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিক ট্রেজারি মিনিস্টারের পদ ত্যাগ করেছেন। তিনি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও মন্ত্রীর দায়িত্ব থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস একটি তদন্ত করেন। তার মতে, টিউলিপ মন্ত্রীর কোড ভঙ্গ না করলেও জনগণকে সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এমনকি লন্ডনের কিংস ক্রসে ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট উপহার হিসেবে পাওয়ার অভিযোগ তাকে আরও বিতর্কিত করেছে। স্যার লরি এটিকে “দুঃখজনক” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, টিউলিপ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কারণে তার নৈতিক অবস্থান ঝুঁকিতে ফেলেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, লেবার পার্টির কোনো মন্তব্য পাওয়া না গেলেও, টিউলিপের পদত্যাগকে দলের ভেতরে চাপ কমানোর একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবুও, কনজারভেটিভ পার্টি তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
বিতর্কিত এই পরিস্থিতিতে, টিউলিপের এমপি পদ খালি হলে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চান ব্রিটিশ-বাংলাদেশি অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন টিটো। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক পরিবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে টিউলিপের নৈতিকভাবে ব্রিটিশ এমপি পদে থাকা উচিত নয়। এ ধরনের ময়লা ব্রিটিশ রাজনীতিতে স্থান পাওয়ার যোগ্য নয়।”
টিউলিপের পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ রাজনীতিতে এই পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।