টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির প্রভাবশালী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে চার বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হয়ে তদন্তে নেমেছে।
বাংলাদেশের হাইকোর্ট ইতোমধ্যে দুদককে এই অর্থপাচার এবং দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক, তাঁর মা শেখ রেহানা এবং খালা শেখ হাসিনা ভুয়া কোম্পানি ও বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ পাচার করেছেন। শেখ হাসিনা, যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হতে পারে। যদি তা হয়, তাহলে তিনি একজন সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে পরিগণিত হবেন এবং তাঁকে গ্রেপ্তারের সুযোগ তৈরি হবে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিককে তাদের শুদ্ধতা ও নীতিমালা বিভাগের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। টিউলিপ সিদ্দিকও এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেনি।
তদন্তের অগ্রগতির অংশ হিসেবে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেছে। তারা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুর্নীতি দমন এবং পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার নিয়ে কাজ করছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি শেখ হাসিনার বিরোধীদের একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তবে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এক সংসদ সদস্য টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর দাবি জানিয়ে পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন।
তদন্ত প্রক্রিয়া সামনে এগোলে টিউলিপ সিদ্দিকের অবস্থান কতটা টিকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—দুদক এবং যুক্তরাজ্যের প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের একটি উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।