দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম গ্রেপ্তারকৃত প্রেসিডেন্ট
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে তার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির পুলিশ ও দুর্নীতি বিরোধী তদন্তকারী সংস্থা এই অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। সিউল থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, বুধবার এই গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
গ্রেপ্তারের আগে তদন্তকারীদের বাধার মুখে পড়তে হয় প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা কর্মী ও সমর্থকদের। তারা বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার মধ্যে একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে প্রায় ৩০০ পুলিশ ও দুর্নীতি দমন সংস্থার সদস্যরা লাডারের সাহায্যে বাসভবনে প্রবেশ করে ইউনকে গ্রেপ্তার করেন।
এর আগে, ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারের একটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তবে এবার দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।
ইউনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় ৩১ ডিসেম্বর। রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত ইউনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও তিনি আদালতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ইউনের সামরিক আইন জারি করার আকস্মিক ঘোষণায় দেশজুড়ে সংকটের সৃষ্টি হয়। বিরোধী দলীয় সদস্যরা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং পার্লামেন্টে সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবি জানায়। মাত্র ৬ ঘণ্টার মাথায় তীব্র জনমত ও রাজনৈতিক চাপের মুখে ইউন এই আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। পরে তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, নতুন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে কেউ বাধা দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে প্রেসিডেন্ট গার্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের গ্রেপ্তারের খবর পুলিশ অস্বীকার করেছে।
ইউনের এই গ্রেপ্তার দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হলো। ঘটনাস্থলে সংঘর্ষে কমপক্ষে আটজন আহত হয়েছেন এবং তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনায় ইউনের গ্রেপ্তার দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।