রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নুরুল হক মোল্লা ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতের এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম বাদী হয়ে শনিবার রাত ১২টার পর মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তেজিত তৌহিদি জনতা কবর থেকে নুরাল পাগলার মরদেহ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা দরবার শরিফে হামলা চালায় এবং মাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নুরাল পাগলার অনুসারীদের সঙ্গে তৌহিদি জনতার সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।
ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও।
আহত শতাধিক মানুষকে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে গুরুতরদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যান।
সংঘর্ষের পর থেকে পুরো এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং জনসাধারণের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
নুরুল হক মোল্লা, যিনি ‘নুরাল পাগলা’ নামে পরিচিত ছিলেন, নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করতেন। সম্প্রতি মৃত্যুর পর তাকে ‘ভিন্নরীতি’তে কবর দেওয়া হয়—যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল।
এই উত্তেজনারই পরিণতি হিসেবে শুক্রবার সংঘর্ষ, হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়দের ধারণা।