বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা এবার পড়তে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইনি সংকটে। ডাচ মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ফর প্লেয়ার্স (JFP) ঘোষণা দিয়েছে, তারা ফিফা ও ইউরোপের পাঁচটি দেশের ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একটি বৃহৎ ক্লাস-অ্যাকশন মামলা করতে যাচ্ছে।
মূল অভিযোগ কী?
জেএফপির দাবি—গত দুই দশকে (২০০২ থেকে বর্তমান পর্যন্ত) ফিফার ট্রান্সফার নীতিমালার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ও যুক্তরাজ্যের প্রায় ১ লাখ পেশাদার ফুটবলার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সংগঠনটির ভাষ্য অনুযায়ী, এসব নীতির কারণে খেলোয়াড়দের গড় আয় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ।
২০২৪ সালের অক্টোবরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস এক রায়ে ফিফার কিছু ট্রান্সফার নীতিকে অবৈধ ঘোষণা করে, যা খেলোয়াড়দের স্বাধীন চলাচলের অধিকার লঙ্ঘন করে এবং প্রতিযোগিতায় বাধা সৃষ্টি করে—এই রায়কেই মামলার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে জেএফপি।
কারা আসামি, কোথায় মামলা?
এই মামলাটি দায়ের করা হবে নেদারল্যান্ডসের মিডেন-নেদারল্যান্ড জেলা আদালতে। আসামিদের তালিকায় রয়েছে:
-
ফিফা,
-
নেদারল্যান্ডস,
-
ফ্রান্স,
-
জার্মানি,
-
বেলজিয়াম,
-
ও ডেনমার্কের ফুটবল ফেডারেশন।
জেএফপির বক্তব্য
জেএফপি বলছে, “ফিফার নীতিমালার মাধ্যমে ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা ঠিক করত, কে কখন দল ছাড়তে পারবে, যার ফলে খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা প্রায় পুরোপুরি খর্ব করা হয়েছিল।”
তাদের মতে, এই মামলা শুধু অর্থ আদায়ের জন্য নয়, বরং খেলোয়াড়দের ন্যায্য অধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই।
তারকাদের উদাহরণ
মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ও পিএসজি তারকা লাসানা দিয়ারা-এর নাম। এক পুরোনো ট্রান্সফার জটিলতায় তিনি যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন, সেটিকেই উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
ফিফার জন্য বড় পরীক্ষা
এই মামলায় খেলোয়াড়রা জয়ী হলে তা ফিফার ট্রান্সফার নীতি ও কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। বিশেষ করে খেলোয়াড়দের অধিকার ও ট্রান্সফার পদ্ধতি নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দরজা খুলে যেতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই সংকটের মুখে ফিফা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।