নারায়ণগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া এলাকায় ফুটপাতের জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন বিমান (৫০) নামে এক হকার। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় অভিযুক্ত অপর হকার গাউছ (৩০) পলাতক রয়েছেন।
নিহত বিমান নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার জালকুঁড়ি এলাকার বাসিন্দা, মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে। প্রতিদিনের মতোই ভোরে উকিলপাড়ার ফুটপাতে মেহেদি ও ফুল বিক্রি করতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে বসা নিয়ে তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় হকার নেতা আফজাল। অভিযোগ, আফজালের চাপে গাউছ নামের আরেক হকার সেখানে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বিমানকে হটিয়ে গাউছকে বসানো নিয়ে চলছিল দখলদারির টানাপোড়েন। বৃহস্পতিবার সকালে সেটি রূপ নেয় প্রাণঘাতী সংঘর্ষে।
বিমান যখন ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বসেছিলেন, তখন গাউছ এসে তার মালামাল ফেলে দেন। এতে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। এক পর্যায়ে গাউছ ক্ষিপ্ত হয়ে বিমানকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন। হঠাৎ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান বিমান। তিনি সেখানেই অচেতন হয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন,
“আমার স্বামী নিরীহভাবে ব্যবসা করতেন। কয়েকদিন ধরেই তাকে হুমকি দিয়ে জায়গা ছাড়তে বলা হচ্ছিল। আজ ওরা তাকে মারেই ফেলল। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এদিকে, খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিনয় বাড়ৈ বলেন,
“এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অভিযুক্ত গাউছকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।”
নারায়ণগঞ্জ শহরের ব্যস্ততম এলাকা উকিলপাড়ায় প্রতিদিন শতাধিক হকার ফুটপাতে বসে ব্যবসা করেন। জায়গা নিয়ে প্রায়শই দেখা যায় দ্বন্দ্ব ও মারামারি। এবার সেই দ্বন্দ্বই কেড়ে নিল একজন হকারের প্রাণ, যা প্রশ্ন তুলছে স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি ও ফুটপাত ব্যবস্থাপনা নিয়ে।