ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্রাক্তন কেবিন ক্রু শাদি এল ফাররা যুক্তরাজ্য সরকারের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়ছেন, যা তাকে এমন একটি দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয়, যেখানে তিনি কখনও বসবাস করেননি।
২৮ বছর বয়সী মিশরীয় নাগরিক শাদি ২০১৬ সালে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে আসেন। তার শৈশব কেটেছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবে, যেখানে তার বাবা-মা একাডেমিক পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ইংরেজিই তার প্রধান ভাষা, এবং মিশরের সঙ্গে তার বাস্তব জীবনের সংযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
২০২১ সালে তিনি দুই বছরের গ্র্যাজুয়েট ভিসা পান এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে কেবিন ক্রু হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে তার ভিসা নবায়নের আবেদন হোম অফিস প্রত্যাখ্যান করে। সরকার পক্ষের যুক্তি ছিল, শাদি সহজেই মিশরে মানিয়ে নিতে পারবেন। তবে শাদি জানান, তিনি জন্মের পরপরই দেশটি ছেড়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে কখনও সেখানে থাকেননি, ভাষাটিও ভালোভাবে বোঝেন না। তাছাড়া, মিশরে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা রয়েছে, যা তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
হোম অফিসের প্রত্যাখ্যানপত্র সম্পর্কে শাদির মন্তব্য, “এই সিদ্ধান্ত যেন কোনো রোবট লিখেছে—মানবিকতা বিবেচনা করা হয়নি, অথচ এতে একজন মানুষের জীবনে গুরুতর প্রভাব পড়ে।” ভিসা আবেদনের কারণে পাসপোর্ট জমা দিতে হওয়ায় তিনি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে কাজ করতে পারেননি। ফলে তিনি কিছুদিন অভ্যন্তরীণ রুটে এবং পরে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও শেষ পর্যন্ত চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
বর্তমানে শাদি অভিবাসন ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছেন এবং মামলার প্রক্রিয়ার সময় কাজ খোঁজার অনুমতি পেয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকতে হলে তাকে দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে, যার জন্য বার্ষিক আয়ের শর্ত হলো কমপক্ষে £৪১,৭০০।
শাদির বাবা ড. ইহাব এল ফাররা মনে করেন, “যুক্তরাজ্যের উচিত মেধাবী ও পরিশ্রমী মানুষদের ধরে রাখা।” শাদির মা মলি বলেন, সৌদি আরবে তার সঙ্গে ছেলের থাকা সম্ভব নয়, কারণ সে এখন প্রাপ্তবয়স্ক।
হোম অফিস এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সূত্র: বিবিসি