সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছে উপকূলীয় জেলা ভোলা। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে শুরু হওয়া ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জেলার চরাঞ্চলগুলোতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার ২০০টি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ভোলার চরফ্যাশনের ঢালচর, চর পাতিলা ও কুকরীমুকরী এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে অন্তত ২০৪টি ঘর। পানির তোড়ে ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও মাছের ঘের, গবাদি পশুও নিখোঁজ রয়েছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন চলছে এবং দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার তিনি তজুমদ্দিনে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন এবং বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেন।
ঝড়ের ফলে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার রিংবাঁধ ও লালমোহনের লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে। পাউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা জানান, লালমোহনে ভাঙা ২০ মিটার বাঁধ ইতোমধ্যে ক্লোজ (বন্ধ) করা হয়েছে এবং তজুমদ্দিনে রিংবাঁধ পুনর্নির্মাণ কাজ চলমান।
পাউবো’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে মেঘনা নদীতে জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে ১৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যায়।
চরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা জানান, শুধু ঘরবাড়িই নয়—ভেসে গেছে বহু মহিষ, গরু ও অন্যান্য গবাদি পশু। মাছের ঘের ও পুকুরের ক্ষয়ক্ষতিও ব্যাপক। তারা ভোলাকে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় টেকসই ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।