যুক্তরাজ্যের কার্ডিফে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলের হাতে খুন হওয়া আতাউর রহমান (বিলাত মিয়া)-এর মরদেহ চার দিন ধরে হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। এখনো ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তার ছেলে ছয়ফুল রহমান বর্তমানে বনমাউথের একটি হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানায়, বুধবার ভোর ৫টার দিকে কার্ডিফের রিচার্ড টেরিস এলাকায় আতাউর রহমানের বাসায় হামলার খবর পায় তারা। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় আতাউর রহমানকে ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অব ওয়েলসে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই বাসা থেকে ৪০ বছর বয়সী ছয়ফুল রহমানকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মানসিক স্বাস্থ্য আইনে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত নয়।
নিহত আতাউর রহমানের পরিবার ও প্রতিবেশীদের বরাতে জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উলুয়াইল গ্রামের বাসিন্দা এবং যুক্তরাজ্যে একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। তার স্ত্রী পারভীন নাহার হক গত বছর ক্যান্সারে মারা যান। স্ত্রী জীবিত থাকাকালে ছয়ফুলের মানসিক অসুস্থতা তেমন বোঝা না গেলেও, স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছয়ফুল মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এর আগেই তিনি স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হন।
ঘটনার সময় আতাউর রহমানের অন্য এক ছেলে ও দুই মেয়ে বাসায় ছিলেন। বাবার চিৎকার শুনে তারা জেগে ওঠেন এবং রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। ছয়ফুল এরপর বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে নিচে লাফ দেন। পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
চার দিন পার হয়ে গেলেও মরদেহ এখনো মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জানাজা ও দাফন কার্ডিফেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
কমিউনিটির অনেকে এ বিষয়ে কথা বলতে অনিচ্ছুক, তবে শাহজালাল মসজিদের এক মুসল্লি বলেন, মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগে আতাউর রহমান মসজিদে এসে নিজ সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছিলেন। “নিয়তির কী নিষ্ঠুর পরিহাস—যিনি নিজের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছিলেন, তাকেই নিজের সন্তানের হাতে প্রাণ হারাতে হলো,” বলেন ওই মুসল্লি।