যুক্তরাজ্যজুড়ে প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্ল্যাকার্ড বহনের অভিযোগে ৭০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ করার পর প্রথম বৃহৎ প্রতিবাদে এসব গ্রেপ্তার হয়।
শনিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে মহাত্মা গান্ধী ও নেলসন ম্যান্ডেলার মূর্তির পাদদেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসে থাকা দুইটি ছোট দল থেকে ৪২ জনকে আটক করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তারা হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর প্রতি সমর্থন জানান।
ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস নামের একটি প্রচারণা সংগঠন এই বিক্ষোভ আয়োজন করে। তারা জানায়, লন্ডনের বাইরে ম্যানচেস্টার, কার্ডিফ ও ডেরিতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
ম্যানচেস্টারে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে ১৬ জন এবং কার্ডিফে বিবিসি অফিসের সামনে ব্যানার হাতে বসে থাকা ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, তাদেরকে সন্ত্রাসবাদ আইন ২০০০-এর ধারা ১২ অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে ভিকার, পেনশনভোগীসহ সাধারণ মানুষও ছিলেন। অনেককে একে অপরের উপর শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানাতেও দেখা যায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে বিক্ষোভকারীদের ব্যাগ তল্লাশি ও পরিচয়পত্র যাচাই করেন। পরে আটককৃতদের পুলিশ ভ্যানে তুলে নেওয়া হয়।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সম্প্রতি আরএএফ ব্রিজ নর্টনে সামরিক বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনায় আলোচনায় আসে। এরপরই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার। পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই এই নিষেধাজ্ঞা পাস হয়।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞসহ আইনজীবী ও নাগরিক অধিকারকর্মীরা এই নিষেধাজ্ঞাকে “চরম” এবং “প্রতিবাদকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে এক কাতারে রাখার বিপজ্জনক নজির” বলে সমালোচনা করেছেন।
নিষেধাজ্ঞার ফলে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন এখন আইএস, আল-কায়েদা ও ন্যাশনাল অ্যাকশনের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে—এটাই প্রথমবার কোনও প্রতিবাদভিত্তিক গোষ্ঠীকে এমনভাবে নিষিদ্ধ করা হলো।