যুক্তরাজ্যের সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় চিকিৎসক নিয়োগের জন্য চালু করা টার্গেটেড এনহ্যান্সড রিক্রুটমেন্ট স্কিম (TERS) বন্ধের শঙ্কায় পড়েছে। এনএইচএস ইংল্যান্ড ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনায় এই প্রকল্পটি পর্যালোচনা করছে, যা বাস্তবায়ন হলে বঞ্চিত অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৬ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় কাজ করতে ইচ্ছুক প্রশিক্ষণার্থী সাধারণ চিকিৎসকদের (জিপি) এককালীন £২০,০০০ অনুদান দেওয়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত ২,০০০-এর বেশি জিপি দরিদ্র এলাকাগুলোতে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রায় সব এলাকাতেই চিকিৎসক সংকট রয়েছে, তবে এটি বঞ্চিত এলাকায় আরও প্রকট। রয়েল কলেজ অফ জিপির (RCGP) তথ্য অনুযায়ী, তুলনামূলকভাবে সমৃদ্ধ এলাকায় একজন জিপি যেখানে গড়ে ১,৮০০ রোগী দেখেন, সেখানে সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ফলে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পেতে দেরি হয়, যা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
চিকিৎসক ঘাটতির কারণে এসব এলাকায় গড়ে ৩০০ রোগী বেশি সেবা নিতে বাধ্য হন। ফলে চিকিৎসকদের ওপর কাজের চাপ বেড়ে যায় এবং স্বাস্থ্যসেবার মান কমে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, TERS প্রকল্প বন্ধ হলে সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় চিকিৎসক নিয়োগ আরও কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে রোগীরা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবেন এবং অনেককে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
রয়েল কলেজ অফ জিপির চেয়ারপার্সন অধ্যাপক কামিলা হাথর্ন বলেন, “যেসব অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেগুলো ইতিমধ্যেই সমস্যায় জর্জরিত। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনা রোগীদের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যদি এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্য আরও বাড়বে।”
তিনি আরও বলেন,”সরকার বলে তারা স্বাস্থ্যসেবা খাতে বৈষম্য কমাতে চায়, কিন্তু এই প্রকল্প বন্ধ হলে সেটি আরও বেড়ে যাবে।”
এনএইচএস ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি প্রকল্পটি বাতিল হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যের দরিদ্র এলাকায় চিকিৎসক সংকট আরও প্রকট হবে এবং সাধারণ মানুষ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
সরকার প্রকল্পটি চালিয়ে যাবে নাকি বাতিল করবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, TERS-এর মতো উদ্যোগ বন্ধ হলে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য