পৃথিবী মহান আল্লাহ তায়ালার। তিনি-ই সাজিয়েছেন এ ধরণীকে। সবুজের সমারোহ, সবুজাভ প্রকৃতি, দিকদিগন্তের মনোহরী দৃশ্য সত্যি-ই হৃদয়কে মোহাবিষ্ট করে। পাহাড়ের মেঘরাশি, সাগরের জলধারা, পাখিদের কলতান-এসব মহান আল্লাহ তায়ালার অপার দান। কিন্তু একদিন এই সাজানো-গোছানো মেদিনী ধ্বংস হয়ে যাবে। পৃথিবীটা মূলত নশ্বর। মহান আল্লাহ তায়ালার অস্থায়ী একটি নির্মাণ।
যদিও পৃথিবীর নির্মাণশৈলী আকর্ষণীয়।এই পৃথিবীর সমাপ্তি ঘটবে কিয়ামতের মাধ্যমে।পৃথিবী কখন ধ্বংস হবে–সে সম্পর্কে কোরআন ও হাদিস থেকে জানা যায়, কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে আলামাতে ছুগরা তথা ছোট-ছোট আলামত প্রকাশ পাবে। যেমন-খুন,অজ্ঞতা ও জিনার প্রতুলতা, মদ্যপান, গান-বাজনা, সুদ ভক্ষণ, ফোরাত নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়া,ইত্যাদি। এসব ছোট-ছোট আলামতের অধিকাংশ-ই বাস্তবতার রূপ নিচ্ছে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণতা পাচ্ছে।
এরপর প্রকাশ পাবে আলামতে কুবরা তথা বড় আলামত। তারপর-ই কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।পৃথিবীর মানবজাতি, জিন জাতি, জীবজন্তু–সবই ধ্বংস হবে।এ ১০ টি আলামত প্রকাশ না হলে এই পৃথিবী ধ্বংস হবে না।এটাই সকল মুমিনের বিশ্বাস হওয়া উচিত। হাদিসে সে ১০ টি আলামতের কথা পাওয়া যায়।
১. ঈসা আলাইহিস-সালাম এর অবতরণ।কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি বর্তমানে চতুর্থ আসমানে রয়েছেন। কিয়ামতের সন্নিকটে আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। এবং মিথ্যাবাদী দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
২. দাজ্জালের আগমন।কিয়ামতের অন্যতম একটি আলামত হলো–দাজ্জালের আবির্ভাব। সে গুনাহগার, দুর্বল ঈমানদারকে ধোঁকা দিবে। তারা তার ফাঁদে পড়ে যাবে।দাজ্জাল অর্থ মিথ্যাবাদী হবে। আর এজন্যই তাকে দাজ্জাল নামে নামকরণ করা হয়েছে।আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেক ক্ষমতা দান করবেন। পৃথিবীতে সে এমন কিছু ঘটাবে যা দেখে মানুষ বিস্মিত হয়ে যাবে।
৩. পশ্চিম দিকে সূর্য উদয়ন। কিয়ামতের আলামতের মধ্যে গুরত্বপূর্ণ আলামত এটি। এটি উদিত হলে বান্দার আমল গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে গতানুগতিক ঈমানদারগণ শরিয়তের বিধিনিষেধ মেনে চলবে।
৪. ইয়াজুজ-মাজুজ এর আগমন। তারা মূলত আল্লাহ তায়ালার ভয়ংকর এক জাতি। কিয়ামত খুব কাছাকাছি চলে এলে দেখা মিলবে তাদের। দুনিয়াতে এসে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। মানবজাতিকে কষ্ট দিবে এবং বিরক্ত করবে।
৫. দাব্বাতুল আরদ প্রকাশ পাবে। কিয়ামতের অন্যতম নিদর্শন এটি। সে মানুষের সহিত কথা বলবে। মানুষকে মুমিন,কাফের বলে শনাক্ত করবে। ৬. একটি ধোঁয়া বের হবে। কিয়ামত ঘনিয়ে এলে এটি পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাবে। মুমিন,কাফের,মুনাফেক–সকলের কাছে-ই পৌঁছে যাবে। মুমিনগণ সর্দি রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবে। কাফের ও মুনাফিকদের সকল ছিদ্রে প্রবিষ্ট হয়ে যাবে। এতে বিদায় নেবে পৃথিবীর ভালো মানুষগুলো। এবং কিয়ামত সংঘটিত হবে দুষ্ট লোকদের ওপর।
৭. ইয়ামেন থেকে একটি আগুন বের হবে। এটি সকল মানুষকে হাঁকিয়ে নিবে হাশরের মাঠ (শামের সিরিয়া) এর দিকে। মানুষ যেখানে গিয়ে বিশ্রাম,রাত্রিযাপন করবে এটিও সেখানে অবস্থান করবে।
৮.৯.১০. কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবী ধ্বংসের সংকেতস্বরূপ তিনটি ভূমিধস হবে। একটি পৃথিবীর পশ্চিম দিকে, আরেকটি পূর্বদিকে আরেকটি আরব ভূখণ্ডে। (মুসলিম: হাদিস: ২৯০১ ; আবু দাউদ: হাদিস: ৪৩১১; মুশকিলুল আছার: হাদিস: ৯৬০)