Uk Bangla Live News | Stay updated with UK Bangla Live News

রমজানে মুমিনের কর্মসূচি যেমন হওয়া চাই

ডেস্ক সংবাদ

রমজান সব মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ হিসেবে এই মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যধিক। পবিত্র এই মাস প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের কাছে আত্মশুদ্ধি, সৌভাগ্য ও গুনাহ মাফের মাস হিসেবেই পরিচিত। বরকতময় এই মাসটি রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এগুলো যথাযথভাবে অর্জনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী আমল করা কাম্য। রমজানে রোজা পালনসহ যেসব আমলের পরিকল্পনা করা উচিত সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
রোজা পালন করা: রমজানের প্রথম ও প্রধান কর্মসূচি হলো রোজা পালন করা। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ, মুকিম, মুসলিম নর-নারীর ওপর রোজা রাখা ফরজ। মহান আল্লাহ বলেন,
হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা পালন করবে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি)
তারাবি পড়া: রমজান মাসে রাতে তারাবির নামাজ পড়ার মাধ্যমে আমরা বহু নেকির অধিকারী হতে পারি। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ পড়বে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (সহিহ বুখারি)
কোরআন পাঠ করা: রমজান হলো কোরআনের মাস। আল্লাহতায়ালা বলেন,
রমজান মাস, যে মাসে বিশ্বমানবের জন্য পথপ্রদর্শন, সুপথের উজ্জ্বল নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের প্রভেদকারী কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫)
কোরআনের মাসে আমরা বেশি বেশি কোরআন পড়ার চেষ্টা করব। ইবনে ওমর (রা.) বলেন,
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে প্রভু! আমি তাকে দিনে খাবার গ্রহণ করতে এবং প্রবৃত্তির তাড়না মিটাতে বাধা দিয়েছি। অতএব তার ব্যাপারে এখন আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে, হে প্রভু! আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ আল্লাহতায়ালা গ্রহণ করবেন। (মুসতাদরাক হাকিম)
নেক আমল বৃদ্ধি করা: অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে আমলের ফজিলত অনেক বেশি। এক হাদিসে বিষয়টি এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল। (শুআবুল ইমান) এ তো হলো রোজা ছাড়া এ মাসের অন্যান্য আমলের সওয়াব। আর রোজার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা নিজেই দেবেন। (সহিহ মুসলিম)
তওবা-ইসতেগফার করা: আল্লাহতায়ালা বান্দার তওবায় খুশি হন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কেউ তওবা করলে, ইমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত ৭০)
আন্তরিকভাবে তওবাকারীকে আল্লাহতায়ালা ভালোবাসেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং অসীম দয়ালু। তিনি কোরআনে বলেন,
আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা নিসা, আয়াত ১০৬) ক্ষমা প্রার্থনার জন্য ইসতেগফার অন্যতম মাধ্যম। এটি একটি উত্তম আমল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও দিনের মধ্যে ৭০ বারেরও বেশি ইসতেগফার ও তওবা করতেন। (সহিহ বুখারি)
অধিক দোয়া করা: রমজানে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল করা হয়। রোজা পালনকারী, মুসাফির এবং মজলুম ব্যক্তি, তাদের দোয়া কবুল হয়। (আবু দাউদ) আমাদের অনেকেই শুধু ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে দোয়া করে, অন্য সময় দোয়া করে না। একজন রোজাদারের দোয়া সারা দিনেই কবুল হয়।
ইফতারের আয়োজন করা: রমজানের কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম কর্মসূচি হলো অন্যজনকে ইফতার করানো। হাদিসে এসেছে, হজরত যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো রোজা পালনকারীকে যে ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোজা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর ফলে রোজা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্রও কমানো হবে না। (ইবনে মাজাহ)
শেষ দশকের ইবাদত: রমজানের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হলো শেষ দশ রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা। আয়েশা (রা.) বলেছেন, রমজানের শেষ দশ দিন রসুলুল্লাহ (সা.) এত বেশি ইবাদত করতেন যে, অন্য কোনো সময়ে এ রকম ইবাদত করতেন না। (সহিহ মুসলিম) এর উদ্দেশ্য হলো, যাতে করে কদরের রাত ছুটে না যায়। কেননা রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কাছে এমন মাস উপস্থিত, যাতে রয়েছে এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এটা থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো, সে সমস্ত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। কেবল বঞ্চিত ব্যক্তিরাই তা থেকে বঞ্চিত হয়। (ইবনে মাজাহ)
আমাদের সবাইকে শেষ দশকে বেশি বেশি ইবাদতের জোর দিতে হবে, যাতে করে কোনোভাবেই কদরের রাতটি ছুটে না যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তার পেছনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি)
লেখক: শিক্ষার্থী: মাথিয়া ই. ইউ. ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসা কিশোরগঞ্জ

Print
Email

সর্বশেষ সংবাদ

Screenshot_9
যুক্তরাজ্যে কারিগরি ত্রুটিতে ১২০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল, যাত্রী দুর্ভোগে
যুক্তরাজ্যে কারিগরি ত্রুটিতে ১২০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল, যাত্রী দুর্ভোগে
Screenshot_8
ওসমানী বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজের চাকা বিস্ফোরণে আহত ২ কর্মী
ওসমানী বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজের চাকা বিস্ফোরণে আহত ২ কর্মী
1611261541775234
ছেলের বিয়ের আলোকসজ্জায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবার মৃত্যু
ছেলের বিয়ের আলোকসজ্জায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবার মৃত্যু
Screenshot_7
গণপরিবহনে তৃতীয় লিঙ্গের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ যাত্রীরা, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগান্তি
গণপরিবহনে তৃতীয় লিঙ্গের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ যাত্রীরা, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগান্তি
Screenshot_6
মসজিদের ৪২ বিঘা জমি ভূমিদস্যুর দখলে
মসজিদের ৪২ বিঘা জমি ভূমিদস্যুর দখলে
কোটি-মানুষের-হৃদয়ের-স্পন্দন
কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ইউকে বাংলা লাইভ নিউজ
কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ইউকে বাংলা লাইভ নিউজ

সম্পর্কিত খবর