২০১৯ সালের জুলাইয়ে বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি নিয়ে। তবে পার্লামেন্টের বিরোধিতার মুখে পড়লে তিনি একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ নেন—সংসদ পাঁচ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা। উদ্দেশ্য ছিল, ব্রেক্সিট বিরোধীরা যেন আইন পাস করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে না পারে।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে রানী এলিজাবেথের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দরকার ছিল। কিন্তু এই পদক্ষেপ প্রাসাদকে বিব্রত করে। প্রাসাদের অনেকে মনে করেন, তাদের যথাযথভাবে জানানো হয়নি, এবং রানী তার গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় এমন রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ানোতে অস্বস্তি বোধ করেন।
স্থগিতাদেশ ঘোষণার পরে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। অবশেষে ২৪ সেপ্টেম্বর, যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়—এই স্থগিতাদেশ অবৈধ। এই রায়ে জনসন ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “তোমরা আমাকে ঠকিয়েছো!”
বিভিন্ন খবরে দাবি করা হয়, জনসন পরে রানীর কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে প্রাসাদ বা ডাউনিং স্ট্রিট কেউই নিশ্চিত করে বলেনি যে তিনি আসলে ক্ষমা চেয়েছিলেন। বরং বরিস জনসন নিজেই পরে এক বিবৃতিতে বলেন, “ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ কল্পনা।” অর্থাৎ, তিনি সম্ভবত কখনও রানীর কাছে ক্ষমা চাননি।
রানী এলিজাবেথ জনসনের প্রতি ব্যক্তিগতভাবে কেমন মনোভাব পোষণ করতেন, সে বিষয়েও কিছু মন্তব্য উঠে এসেছে—তাকে কখনও “বদমাশ ও নাটুকে” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, জনসনের রাজপরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষ করে প্রিন্স চার্লস (বর্তমানে রাজা চার্লস) এর সাথেও সম্পর্ক সবসময় সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল না। রুয়ান্ডা অভিবাসন নীতিতে মতবিরোধ এবং পরে কিছু মন্তব্য নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এমনকি জনসন এক পর্যায়ে ভবিষ্যৎ রাজাকে বলেছিলেন, “তোমার যদি দাসত্ব নিয়ে কথা বলতে হয়, তবে ডাচি অফ কর্নওয়াল বিক্রি করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
এই মন্তব্য প্রাসাদে নেতিবাচকভাবে প্রতিফলিত হয়, এবং ধারণা করা হয় যে বরিস ও রাজপরিবারের মধ্যে সম্পর্ক আর কখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।