গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে র্যাব বিলুপ্তিসহ ১০ দফা সুপারিশ দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে গুমের শিকারদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সুপারিশগুলো তুলে ধরেন সংস্থাটির সিনিয়র রিসার্চার তাকসিম তাহমিনা।
অধিকার-এর ১০ দফা সুপারিশ:
১. গুমের প্রতিটি ঘটনায় স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করা।
২. নিখোঁজদের সন্ধানে জাতীয় কৌশল ও নীতিমালা প্রণয়ন।
৩. ফিরে আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
৪. নিখোঁজ ব্যক্তিদের জন্য “Certificate of Absence” প্রদান ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
৫. সাক্ষী ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন।
৬. সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ বাতিল বা প্রয়োজনীয় সংশোধন।
৭. র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) বিলুপ্তি।
৮. গুমের তথ্য ও প্রমাণ নষ্টকারীদের আইনের আওতায় আনা।
৯. দ্রুত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
১০. আন্তর্জাতিক সনদ ICPPED বাস্তবায়ন ও ফরেনসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।
অনুষ্ঠানে অধিকার অভিযোগ করে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করে বিরোধীদের দমন করতে গুমকে একটি ‘রাষ্ট্রীয় হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বিরোধী রাজনীতিক ও সরকারবিরোধীদের গোপনে আটক করে নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
২০২৫ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর গঠিত ‘গুম তদন্ত কমিশন’-এ বিপুল অভিযোগ জমা পড়ে। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, গুম পরিকল্পনার একটি ‘তিন স্তরের পিরামিড’ কাঠামো ছিল, যার শীর্ষে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অধিকার জানায়, বর্তমানে নতুন করে গুমের ঘটনা না ঘটলেও, আগের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া খুবই ধীর। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে—গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হলে, ভবিষ্যতে আবারও গুমের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।