শীতে অগ্নিকাণ্ড বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করে। ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য মানুষ যে ধরনের গরম করার পদ্ধতি বা যন্ত্র ব্যবহার করে, তার সঙ্গে অসতর্কতা বা অবহেলা মিলিত হলে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
জেনে নিন শীতকালে অগ্নিকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার কারণগুলো-
১. গরম করার যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অসতর্কতা: শীতে ঘর গরম রাখতে হিটার, কাঠ বা কয়লার চুলা, কেরোসিন বাতি ইত্যাদি বেশি ব্যবহার করা হয়। এগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা না করলে আগুন ধরে যেতে পারে। ইলেকট্রিক হিটারের ওভারলোড বা ভুল ব্যবহার আগুনের কারণ হতে পারে।
২. গ্যাস বা কাঠের চুলার ব্যবহার বৃদ্ধি: শীতে রান্নার সময় গ্যাস চুলা বা কাঠের চুলার ব্যবহার বাড়ে। অসাবধানতাবশত আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি কাছাকাছি দাহ্য বস্তু থাকে।
৩. বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অতিরিক্ত চাপ: শীতে একসঙ্গে অনেক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম (যেমন: হিটার, ওয়াটার হিটার) ব্যবহারের কারণে বৈদ্যুতিক তারের উপর চাপ বেড়ে যায়, যা শর্ট সার্কিটের কারণ হতে পারে।
৪. শুষ্ক আবহাওয়া: শীতে আবহাওয়া সাধারণত শুষ্ক থাকে। ফলে আগুন সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
৫. দাহ্য পদার্থের মজুত: শীতে কাঠ, কেরোসিন, এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থ বেশি মজুত রাখা হয়, যা আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়ায়। অনেক সময় এসব পদার্থ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয় না।
৬. অলংকার বা পোশাক থেকে আগুন লাগা: শীতে ভারী ও লম্বা কাপড় (যেমন শাল, চাদর) ব্যবহৃত হয়, যা সহজেই চুলা বা হিটারের আগুনে স্পর্শ করে দাহ্য হতে পারে।
৭. ধূমপানজনিত অসতর্কতা: শীতে অনেকেই ঘরের ভেতরে ধূমপান করে, যা থেকে অজান্তে আগুন লেগে যেতে পারে।
৮. উত্সব ও আলোকসজ্জা: শীতকালীন উৎসবের (যেমন: বড়দিন, পহেলা ফাল্গুন) সময় মোমবাতি, ফানুস, বা আতশবাজি ব্যবহারে অসতর্কতা থাকলে অগ্নিকাণ্ড হতে পারে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা-
১. বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সঠিকভাবে ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
২. দাহ্য পদার্থ সুরক্ষিত জায়গায় সংরক্ষণ করুন।
৩. হিটার ও চুলার কাছাকাছি দাহ্য বস্তু রাখবেন না।
৪. ধূমপান বা খোলা আগুন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
৫. অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা (যেমন: ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার) ঘরে রাখুন এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করতে শিখুন।
সতর্কতা অবলম্বন করলে শীতকালীন অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।