লন্ডনের মেয়র স্যার সাদিক খানের সংসদে প্রত্যাবর্তনের পথ রুদ্ধ করতে লেবার পার্টির উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার নতুন একটি কৌশল গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি তিনি একটি বিল উত্থাপন করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—একইসঙ্গে কেউ লন্ডনের মেয়র ও সংসদ সদস্য (এমপি) হতে পারবেন না।
এই আইনের মাধ্যমে স্যার সাদিকের জাতীয় রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। এটি কেবল লন্ডনের জন্য নয়, অন্যান্য শহরের মেয়রদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেয়রদের উচিত “সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে” স্থানীয় জনগণের সেবা করা।
এর আগে বরিস জনসনের সময়ে তিনি একই সঙ্গে মেয়র ও এমপি ছিলেন এবং তা ব্যবহার করেছিলেন টোরি পার্টির নেতৃত্বে পৌঁছানোর জন্য। সাদিক খানকেও নিয়ে গুঞ্জন ছিল যে তিনিও এই একই পথ অনুসরণ করতে পারেন।
কিন্তু নতুন “ইংলিশ ডিভলিউশন বিল”-এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “যদি কেউ যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্য হন, তবে তিনি মেয়র পদে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।” এই বিলের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের গ্রেটার লন্ডন অথরিটি অ্যাক্টের সংশোধন করা হবে।
এ নিয়ে একজন টোরি কৌশলবিদ The Telegraph-কে বলেছেন, “ওয়েস স্ট্রিটিংয়ের মতো আরও একজন সম্ভাব্য নেতৃত্বপ্রত্যাশীকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছেন অ্যাঞ্জেলা রেনার। তাকে দেশের চেয়ে দলীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিতে দেখা যাচ্ছে।”
সাদিক খান বর্তমানে লন্ডনের মেয়র হিসেবে তৃতীয় ও সম্ভবত শেষ মেয়াদে রয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে এমপি ছিলেন এবং ২০০৫ সালে প্রথমবার সংসদে যান।
যদিও তিনি বহুবার নেতৃত্ব নিয়ে নিজের আগ্রহ অস্বীকার করেছেন, পর্যবেক্ষকদের মতে তিনি লেবার পার্টির নেতৃত্বের একজন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত। মেয়র পদে পুনর্নির্বাচনের সময় তিনি বলেছিলেন, “আমার কোনও লেবার নেতা হওয়ার আগ্রহ নেই এবং কমন্সে ফিরে যাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাও নেই।” তবে রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই ধরনের অস্বীকার অনেক সময় কৌশলের অংশ হিসেবেই দেখা হয়।
অ্যাঞ্জেলা রেনার ইতিমধ্যেই আরেক নেতা ওয়েস স্ট্রিটিংয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্য একটি আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি এমন একটি ফাঁক তৈরি করছেন, যার ফলে জেরেমি করবিনের মতো প্রার্থীরা আবারও সুবিধা পেতে পারেন।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন রাজনৈতিক দল ও প্রচার সংগঠন একইসাথে নিবন্ধন করা যাবে, যা স্ট্রিটিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে—কারণ গত নির্বাচনে তিনি একজন ফিলিস্তিনপন্থী প্রার্থীর চেয়ে মাত্র ৫০০ ভোটে জয় পেয়েছিলেন।
দলের নেতৃত্ব নিয়ে রেনারকে নিয়েও গুঞ্জন চলমান, বিশেষ করে যখন সম্প্রতি The Telegraph-এ তার একটি ট্যাক্স সংক্রান্ত মেমো ফাঁস হয়েছে।