সিলেট সদর উপজেলায় লন্ডন প্রবাসী সোমা মাহমুদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী, বিশেষ করে তৌহীদি জনতা ও জামায়াত শিবিরের সমর্থকরা এই হামলা চালায়। হামলায় সোমা মাহমুদের বাবা-মা মারাত্মকভাবে আহত হন এবং বর্তমানে তারা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমা মাহমুদ সিলেট সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকার মাহমুদুর রহমান ও জমিরুন নেসার দ্বিতীয় সন্তান। তিনি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ২০২১ সালে লন্ডনে যান। লন্ডনে গিয়ে তিনি এক বাঙ্গালী ছেলের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান এবং গর্ভবতী হয়ে সম্প্রতি একটি সন্তানের জন্ম দেন।
এ তথ্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় কাউন্সিল, মসজিদের ইমাম, খতীব, মুয়াজ্জিন, তৌহীদি জনতা ও হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সোমা মাহমুদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি সোমার বাবা-মাকে মারাত্মকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
সোমার এক প্রতিবেশী আবুল মিয়া জানান, সোমা লন্ডনে গিয়ে একটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সালিশি বৈঠকে পরিবারের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেয়া হয় যে তাকে পরিবার ও এলাকায় আশ্রয় দেয়া হবে না। এর ফলে সোমার পিতা-মাতা মেয়েকে ত্যাজ্য করেন এবং সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেন। পরে আত্মীয়স্বজন জানালে তাঁরা মেয়েকে কঠোর শাসন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আত্মীয় জানিয়েছেন, সোমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা বাংলাদেশের মধ্যে এসে তাকে ও তার নবজাতককে হত্যা করার গোপন পরিকল্পনা করছে এবং অন্যরা তাকে দেশে আসতে নিষেধ করছে। গত কয়েক দিনে সোমার সন্তানের জন্মের খবর ও তার দেশে আসার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তৌহীদি জনতা হামলা চালায়।
স্থানীয় কাউন্সিলের বক্তব্য অনুযায়ী, সোমা মাহমুদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও অবৈধ সন্তানের জন্ম মুসলিম সমাজে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং এটি শরীয়াহ আইন লঙ্ঘন। এজন্য তারা হামলা চালিয়ে বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
একজন জনপ্রতিনিধি, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সোমা ও তার সন্তান দেশে এলে পরিবার বা সমাজের কিছু উগ্র ব্যক্তির দ্বারা তাদের হত্যা করা হতে পারে। কেউ কেউ ঘোষণা দিয়েছেন, সোমাকে এবং তার নবজাতককে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক জানান, এ বিষয়ে এখনও থানায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।