চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের সংরক্ষিত বনের ২৭ কিলোমিটার অংশে হাতি চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে নিয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হচ্ছে ৬টি রোবোটিক সেন্সর ক্যামেরা, যা হাতি শনাক্ত করে ট্রেনচালককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্ক করবে।
এই উচ্চপ্রযুক্তির ক্যামেরা ও সংযুক্ত লাল সংকেতবাতি রাতে বা কুয়াশার মধ্যেও হাতির উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারবে। সংকেত দেখেই চালকরা ট্রেনের গতি কমাবেন বা থামাবেন।
রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন জানান, “চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হাতির করিডর রয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে ওভারপাস ও আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও সতর্কতা হিসেবে এবার রোবোটিক ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।”
হাতির করিডর ও দুর্ঘটনার পেছনের গল্প
চুনতি, ফাঁসিয়াখালী ও মেধাকচ্ছপিয়া বনাঞ্চলজুড়ে ৪০-৫০টি এশিয়ান হাতি চলাচল করে। খাবার ও পানির সন্ধানে চলাচলের সময় রেললাইন পার হতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়।
-
২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর চুনতিতে ট্রেনের ধাক্কায় একটি বাচ্চা হাতি মারা যায়।
-
২০২৫ সালের ২২ জুলাই সৈকত এক্সপ্রেসের চালক আবদুল আওয়াল দূর থেকে হাতি দেখে দ্রুত ট্রেন থামিয়ে দেন, বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
এই ঘটনার পর সরকার অভয়ারণ্য এলাকায় ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে।
প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ
প্রকল্পের আওতায় রেলচালক ও পরিচালকদের এক দফা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প শেষ হলে আরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে সংকেত পেয়ে দ্রুত সাড়া দিতে পারেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চালু হওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এখন প্রতিদিন চার জোড়া ট্রেন চলাচল করছে, যা দিন দিন আরও ব্যস্ত হয়ে উঠছে।