মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। বিপদগ্রস্থ এবং বিপন্ন বন্যপ্রাণীদের সেবাই সংগঠনের কাজ। গত ২০১২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার লোকালয় থেকে ৬৫৮টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বনে ফিরিয়ে দিয়েছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। এসব প্রাণীদের মধ্যে বিরল প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে।
বন্যাপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন কর্তপক্ষ জানিয়েছে, গত ২০২৩ সালে ৩৮টি ও ২০২৪ সালে ৩৭টি প্রাণী লোকালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা প্রাণীদের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে অজগর সাপ। এছাড়াও বানর, লজ্জাবতী বানর, মেছো বিড়াল, চিতা বিড়াল, বনবিড়াল, বিভিন্ন ধরনের প্যাঁচা, মদনটাক, মুনিয়া পাখি, শকুন, তক্ষক, শঙ্খিনী সাপ, গন্ধগোকুল, রেড আইক্যাট স্নেক, ধূসর ফণীমনসা ইত্যাদি। এসব প্রাণী বন থেকে খাদ্যের সন্ধানে অথবা পথহারা হয়ে লোকালয়ে ছুটে এসেছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন। বন থেকে ছুটে আসা এসব প্রাণী কোন কোন সময় অসচেতন মানুষের হাতে মারাও যায়। আবার সড়ক পার হতে গিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়েও মারা যাচ্ছে।
শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, প্রাণীরা সবসময় নির্জন বনকেই তাদের নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। লাউয়াছড়া বনের পরিবেশ আর আগেরমতো নেই। প্রচুর পরিমাণ পর্যটক আগমনে বনের পরিবেশ বিনষ্ট। বনে নেই প্রাণীদের খাবার। এছাড়াও বনের ভিতর থাকা অনেক বৃক্ষ চুরি হয়ে যাওয়ায় বনের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই বন্যপ্রাণীরা খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দিকবেদিক ছোটাছুটি করছে। একসময় এনব প্রাণী লোকালয়ে চলে এসে জীবন বিপন্ন হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, বনের ভিতর অবাধ বিচরণ রোধ করা, বন রক্ষায় কঠুর প্রদক্ষেপ নেওয়া, বন্যপ্রাণীর খাদ্য নিশ্চিত করে বনের পরিবেশ ফিরিযে আনতে হবে। দ্রুত প্রদক্ষেপ না নিতে পারলে হয়তো একদিন টিলা পড়ে থাকবে, থাকবেনা বৃক্ষ, থাকবেনা প্রাণী।