
পূর্ব ইউরোপে আরও সেনা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বললো ‘ধ্বংসাত্মক’
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের আশঙ্কার মধ্যে ইউরোপে আরও দুই হাজার সেনা পাঠাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এটিকে ‘ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ’ মন্তব্য করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পেন্টাগনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন লাখ খানেক সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়নি রাশিয়া। পুতিন বাহিনী যেকোনো সময় সাবেক সোভিয়েত দেশটি আক্রমণ করতে পারে বলে বারবার আশঙ্কাপ্রকাশ করছে পশ্চিমারা। এ অবস্থায় পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর শক্তি বাড়াতে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের ফোর্ট ব্র্যাগ সেনানিবাস থেকে দুই হাজার মার্কিন সেনা পোল্যান্ড ও জার্মানিতে যাবে। এছাড়া জার্মানিতে থাকা আরও এক হাজার মার্কিন সেনা রোমানিয়ায় যাবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি সেনা মোতায়েনকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে উল্লেখ করেছে রাশিয়া।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে পুতিনকে শক্তিশালী বার্তা দেওয়া হচ্ছে। খোলাখুলি বললে—বিশ্ববাসীর প্রতি বার্তা এটাই যে, ন্যাটো যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের মিত্রদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, ইউক্রেনে হামলা হলে ইউরোপে পাঠানোর জন্য সাড়ে আট হাজার মার্কিন সেনা প্রস্তুত রয়েছে। তবে, এখন ইউরোপে যে দুই হাজার সেনা পাঠানো হচ্ছে, তা ওই সাড়ে আট হাজারের বাইরে বলে জানা গেছে।
বাড়তি সেনা মোতায়েনের ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যতক্ষণ আগ্রাসী আচরণ করবেন, আমরা পূর্ব ইউরোপে আমাদের ন্যাটো মিত্রদের আশ্বস্ত করতে থাকবো যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে রয়েছে।
বাইডেন প্রশাসনের এমন ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্দার গ্রুশকো সতর্ক করে বলেছেন, এটি দুই পক্ষের সমঝোতার পথ আরও কঠিন করে তুলবে। পূর্ব ইউরোপে বাড়তি মার্কিন সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে সামরিক উত্তেজনা বাড়বে ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সুযোগ কমে আসবে।
রাশিয়াকে ইউক্রেন আক্রমণ থেকে বিরত রাখতে হুমকি-ধামকির পাশাপাশি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো। যদিও মস্কো বারবার বলে আসছে, কেউ বাধ্য না করলে তাদের ইউক্রেন আক্রমণের কোনো ইচ্ছা নেই।
এদিকে, পেন্টাগন মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, পূর্ব ইউরোপে নতুন সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত ন্যাটোর প্রতি পূর্বপ্রতিশ্রুতির অংশ মাত্র। কোনো মার্কিন সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যাচ্ছে না। কারণ, তারা এখনো ন্যাটো সদস্য নয়।
তবে পেন্টাগনের এমন কথায় পুতিন ভরসা করবেন বলে মনে হয় না। তিনি বল পশ্চিমাদের কোর্টে ঠেলে গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রই চাচ্ছে রাশিয়া যেন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায়। এর মাধ্যমে মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ইচ্ছা ওয়াশিংটনের।
সূত্র: এনডিটিভি