
সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপিতে চলছে ভোট
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সপ্তম ধাপে ১৩৮টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশের ২০ জেলার ২৪টি উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা এ ভোটগ্রহণ চলবে।
১৩৮ ইউপির মধ্যে ৯টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং বাকি ১২৯টিতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি।
সপ্তম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৭১ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১১ জন। এছাড়াও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ইসি থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতি ইউনিয়নে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি মোবাইল ফোর্স থাকবে। প্রতি তিনটি ইউনিয়নে তাদের সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এছাড়া র্যাবের সমন্বয়ে প্রতি উপজেলায় মোবাইল টিম দুইটি এবং একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। বিজিবির সমন্বয়ে প্রতি উপজেলায় মোবাইল টিম দুইটি এবং একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে দুইটি মোবাইল টিম একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। ১ হাজার ৩৫০টি ভোটকেন্দ্রের ৭ হাজার ৮৫টি ভোট কক্ষে ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ জন, নারী ভোটার ১১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের তিনজন ভোটার রয়েছেন।
এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের ষষ্ঠ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব ধাপে নির্বাচনি সহিংসতাসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ধাপের ভোটেও রয়েছে শঙ্কা। যদিও নির্বাচন কমিশন থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সপ্তম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। ১৩৮টি ইউপির মধ্যে মাত্র নয়টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। অন্যগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।’
ইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি উপজেলা একজন এবং ভোটগ্রহণের পূর্বের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দিন অর্থাৎ মোট চার দিনের জন্য প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় চাহিদা ও বাস্তবতার আলোকে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, সপ্তম ধাপে ৭১ জন প্রার্থী বিনা-ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, সংরক্ষিত পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে রয়েছেন ৪৭ জন। চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন ৫ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন, সংরক্ষিত পদে এক হাজার ২৩৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪ হাজার ৬২ জন রয়েছেন।
ইসির নির্বাচন কমিশন শাখা জানায়, এ ধাপে ৫ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন প্রার্থী। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রার্থী এক হাজার ২৩৬ জন। এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে চার হাজার ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ধাপের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৫০টি, ভোটকক্ষ সাত হাজার ৮৫টি।
ইউপি নির্বাচনের এ ধাপে (সপ্তম ধাপে) মোট ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ জন, নারী ১১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন।
চলমান ইউপি নির্বাচনে ইতোমধ্যে ছয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের দুই দফায় ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ৮৩৬ ইউপিতে ভোট হয়েছে। ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এরপর ষষ্ঠ ধাপে ২১৬ ইউপিতে ৩১ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হয়। আর অষ্টম ধাপে আটটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট নেওয়া হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি।