
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারগুলোতে চাহিদা বেশি, দামও বেশি
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশিই জমজমাট হয় রাজধানীর বাজারগুলো। সকাল থেকেই বিক্রেতাদের চিরচেনা হাঁক-ডাক, ক্রেতাদের দরদাম, সব মিলিয়ে এক ভিন্ন চিত্র চোখে পরে বাজারগুলোতে। প্রায় সব ধরনের সবজি কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা করে। ১০০ টাকা ছুঁয়েছে বেগুনের কেজি। সবজির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। মাছ, আলু, পেঁয়াজের দামেও পরিবর্তন আসেনি। এছাড়াও অপরিবর্তিত আছে চালের দামও।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজির সঙ্গে মুরগি বা অন্যান্য পণ্যও অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন, সব কিছুর চাহিদাই বেশি থাকে, যে কারণে একটু বেশি দামে বিক্রি হয়।
অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা করে। ১০০ টাকা ছুঁয়েছে বেগুনের কেজি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। মাছ, আলু, পেঁয়াজের দামেও পরিবর্তন আসেনি।
দেখা গেছে, প্রতি কেজি খিরা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, গাজর প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা, মূলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, সিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০, নতুন আলু মান ভেদে ২০ থেকে ৩০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ মান ভেদে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫, বাঁধা কপি ৩০ টাকা, ধনেপাতা এক মুঠো ১০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০, বড় রসুন প্রতি কেজি ১৪০, ছোট ৬০ টাকা, আদা প্রতি কেজি ১১০ টাকা।
বাজারে নতুন আসা পুঁইশাকের মেচড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। শালগমের (ওলকপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজি ও শাকের দামে খুব একটা হেরফের হয়নি।
অন্যদিকে ডিম ডজন (লাল) ১০৫ টাকা, সাদা ডিম প্রতি ডজন ১০০ টাকা, সোনালী প্রতি ডজন ডিম ১৭০ টাকা, হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৯০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, সাদা কক মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি লালটা প্রতি কেজি ২৪০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি সাদাটা প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়। তারা জানান, আস্তে আস্তে শিম, ফুলকপি, পাকা টমেটোর সরবরাহ কমে আসছে। তাছাড়া বৃষ্টিতে কিছু সবজি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে। আমাদের ধারণা সামনে সবজির দাম আর কমবে না বরং এখন দিন যত যাবে সবজির দাম বাড়বে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী শামিম বলেন, এক সপ্তাে আগে যে ফুলকপি ৩০ টাকা বিক্রি করেছি, সেই ফুলকপি আজ ৩৭ টাকা পিস কিনে এনেছি। বিক্রি করছি ৪০ টাকা পিস। শুধু ফুলকপি নয়, আড়তে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে গেছে।
কারওয়ানবাজার থেকে সবজি কেনা মিজানুর রহমান বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। চাল, তেল, চিনি কোনো কিছু ক্রেতাদের নাগালে নেই। এখন সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। বাজারে ভরপুর সবজি রয়েছে অথচ সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। এই ভরা মৌসুমে এতদামে সবজি কিনে খেতে হবে আগে কখনো ভাবিনি।
রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে কারওয়ান বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে যাওয়া রাকিক হাসান বলেন, অন্যদিন সুযোগ হয় না, তাই শুক্রবার সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছি। কিন্তু বাজার দর একটু বেশি। তবুও স্থানীয় বাজারের চেয়ে এখানে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। তাই একটু দূরে হলেও প্রতি সপ্তাহে এখান থেকে পুরো সপ্তাহের বাজার করে নিয়ে যাই।
দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজ, আলু, ডিম। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা।
এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি।