
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘গোর’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’
চলচ্চিত্রে দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চলচ্চিত্রের নানা শাখায় অবদানের জন্য ২৭টি বিভাগে ৩০টি পুরস্কার পাচ্ছেন ২৯ জন। অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম ও অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদকে এ বছর দেওয়া হচ্ছে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার। এছাড়াও এ বছর বিশ্বসুন্দরী সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন সিয়াম আহমেদ ও সরকারি অনুদানের সিনেমা গোর-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন দীপান্বিতা মার্টিন।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তথ্য মন্ত্রণালয়ের (চলচ্চিত্র-১) এক প্রজ্ঞাপনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, বরাবরের মতো এ বছরও সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক-গায়িকা, পরিচালকসহ মোট ২৭টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হবে।
আনোয়ারা ও আসাদকে আজীবন সম্মাননা
‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন প্রবীন অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম এবং অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই সম্মাননা পাচ্ছেন আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদ।
সেরা অভিনেতা সিয়াম অভিনেত্রী দীপান্বিতা
এ বছর বিশ্বসুন্দরী সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন সিয়াম আহমেদ ও গোর’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন রোজালিন দীপান্বিতা মার্টিন।
২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে বাজিমাত করেছে ‘গোর’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’। এবার যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে সিনেমা দুটি। এবার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)। শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘আড়ং’। শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’।
পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু (বিশ্বসুন্দরী) ও অপর্ণা ঘোষ (গণ্ডি)। খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন মিশা সওদাগর (বীর)। শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর পুরস্কার পেয়েছে মুগ্ধতা মোরশেদ ঋদ্ধি (গণ্ডি)। শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে মো. শাহাদৎ হাসান বাঁধন (আড়ং, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত)।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন বেলাল খান (হৃদয় জুড়ে)। শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক প্রয়াত মো. সহিদুর রহমান (বিশ্বসুন্দরী)। শ্রেষ্ঠ গায়ক ইমরান মাহমুদুল (বিশ্বসুন্দরী)। শ্রেষ্ঠ গায়িকা দিলশাদ নাহার কনা (বিশ্বসুন্দরী) ও সোমনূর মনির কোনাল (বীর)। শ্রেষ্ঠ গীতিকার কবির বকুল (বিশ্বসুন্দরী)। শ্রেষ্ঠ সুরকার ইমরান মাহমুদুল (বিশ্বসুন্দরী)।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)। শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা ফাখরুল আরেফীন খান (গণ্ডি)। শ্রেষ্ঠ সম্পাদকের পুরস্কার পেয়েছেন মো. শরিফুল ইসলাম (গোর)।
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন উত্তম কুমার গুহ (গোর)। শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক পঙ্কজ পালিত ও মো. মাহবুব উল্লাহ নিয়াজ (গোর)। শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম আহম্মেদ (গোর)। শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় এনামতারা বেগম (গোর) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ আলী বাবুল (গোর)।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘গোর’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’
চলচ্চিত্রে দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। এই পুরস্কারের ২০২০ সালের বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে রীতিমতো বাজিমাৎ করেছে ‘গোর’। গাজী রাকায়েত পরিচালিত এই সিনেমা সর্বোচ্চ ১০টি বিভাগে বিজয়ী হয়েছে।
এবারের আসরে চমক দেখিয়েছে ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমাও। চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত সিনেমাটি পেয়েছে ৮টি বিভাগে সেরা হয়েছে। বলাই বাহুল্য, এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিজেদের করে নিয়েছে সিনেমা দুটি।
‘গোর’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’ যৌথভাবে ২০২০ সালের শ্রেষ্ঠ সিনেমার পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ পরিচালক (গাজী রাকায়েত), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (রোজালিন দ্বীপান্বিতা মার্টিন), শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার গাজী রাকায়েত), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার (গাজী রাকায়েত), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক (মো. শরিফুল ইসলাম), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক (উত্তম কুমার গুহ), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক (পংকজ পালিত ও মো. মাহবুব উল্লাহ), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক (কাজী সেলিম আহমেদ), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা (এনামতারা বেগম) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যানের (মোহাম্মদ আলী বাবুল) পুরস্কার অর্জন করেছে ‘গোর’।
অন্যদিকে ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমার ঝুলিতে গেছে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (সিয়াম আহমেদ), শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা (ফজলুর রহমান বাবু), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক (প্রয়াত মো. সহিদুর রহমান), শ্রেষ্ঠ গায়ক (ইমরান মাহমুদুল), শ্রেষ্ঠ গায়িকা (দিলশাদ নাহার কনা ও সোমনূর মনির কোনাল), শ্রেষ্ঠ গীতিকার (কবির বকুল) ও শ্রেষ্ঠ সুরকার (ইমরান মাহমুদুল) বিভাগের পুরস্কারগুলো।
কাজী হায়াতের ছবিতে পুরস্কার পেয়েছি, তাই স্পেশাল: মিশা
এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ‘বীর’ সিনেমা দিয়ে সেরা খল অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন নন্দিত অভিনেতা মিশা সওদাগর।
পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘এর আগেও আমি একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। তবে এই পুরস্কারটি আমার জন্য স্পেশাল। কারণ এটা আমি পেয়েছি কাজী হায়াৎ সাহেবের ছবিতে অভিনয় করে।
আমার সব সময়ের ইচ্ছা ছিল কাজী হায়াৎ সাহেবের সিনেমা দিয়ে একটি পুরস্কার যেন পাই। কাজী হায়াৎ আমাদের সিনেমার সবচেয়ে বড় একটা সিগনেচার। কমার্শিয়াল হিট সিনেমার নির্মাতা হিসেবে তিনি একজন মহীরূহ। তার সঙ্গে কাজ করেছি অনেক। কিন্তু এই প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলাম। আমি কাজী হায়াৎ সাহেবের কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও বলেন, “আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মহান আল্লাহর কাছে, যিনি আমাকে সুস্থ রেখেছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার পরিবারকে, যাদের জন্য আমি কাজ করতে পারছি। সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা দর্শকদের, তাদের জন্যই আমি মিশা, কাজ করে যাচ্ছি।
ধন্যবাদ জানাই জুরি বোর্ড, তথ্য মন্ত্রণালয়, আমার ‘বীর’ সিনেমার টিম, ছবির প্রযোজক শাকিব খান ও আমার ইকবাল মামাকে।”
মিশা সওদাগর নিয়মিত সিনেমায় অভিনয় করে যেতে চান। সবার কাছে চাইলেন দোয়া।