
সীমান্তে আরও রুশ সেনা জড়ো হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্র
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা যুদ্ধে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা এখনো কাটেনি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগে থেকেই বলে আসছেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ‘এখনও ব্যাপক আশঙ্কা’ রয়েছে। এরই মধ্যেই ২ দিন আগে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সংখ্যক সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল মস্কো। তবে সেনা সরোনার বিষয়ে মস্কোর এই দাবিকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইউক্রেন সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে রাশিয়া যে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে, তা মিথ্যা। বরং রাশিয়া আরও সাত হাজার সেনা বাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অন্যদিকে, রাশিয়া বলছে—সামরিক মহড়া শেষে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। কিন্তু, পশ্চিমা কর্মকর্তারা এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখতে পাচ্ছেন না।
রাশিয়া শুরু থেকেই ইউক্রেন আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে এলেও ইউক্রেন সীমান্তে লাখখানেক রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে।
২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা ট্যাংক বহরের একটি ভিডিও গতকাল বুধবার প্রকাশ করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা রুশ সেনা প্রত্যাহারের এমন দাবির কথা সারা বিশ্ব থেকেই শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু এখন আমরা জানতে পারছি এটি মিথ্যা।’
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সেনা প্রত্যাহার দেখিনি। আমরা শুধু শুনে আসছি।’
জাতীয় ঐক্যের প্রতীকস্বরূপ গতকাল বুধবার দেশজুড়ে নীল ও হলুদের পতাকা উঠিয়ে রাখেন ইউক্রেনবাসী। এদিন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা মাথায় রেখে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে রাশিয়ার সেনা সরানোর দাবির পর বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার এখনও জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হামলা হলে বহু সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হবে এবং রাশিয়ার অর্থনীতির বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া এই ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র তার কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তার ভাষায়, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া এখনও প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। এমনকি রুশ সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
বাইডেন বলেন, ‘রুশ সেনাদেরকে তাদের ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে একটি ভালো ঘটনা কিন্তু আমরা এখনও এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছি না। প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব সেনা এখনও ইউক্রেনকে হুমকিতে রাখার মতো অবস্থায় রয়ে গেছে।’
এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইটার দেওয়া এক বার্তায় বলেন, রাশিয়া থেকে পরস্পরবিরোধী খবর আসছে। দেশটি ইউক্রেন সীমান্তে একাধিক ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করছে। এটিকে শুধু যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবেই ধরে নেওয়া যায়।