
ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে রাশিয়া যাচ্ছে অনেকে
পূর্ব ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলের দোনেস্ক ও লুহানস্ক থেকে প্রায় ৭ লাখ মানুষকে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষনা করছে রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ইতোমধ্যেই ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্ন ওই অংশ দুটি থেকে বাসে করে বেসামরিক সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে তারা।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিকট বিষ্ফোরণের শব্দ এবং ঘনঘন আতঙ্কজনক সাইরেন ধ্বনির মধ্যে যখন এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ আসছিল, তখন এলেনা সোকেলা সিদ্ধান্ত নিলেন তার ছেলেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার সময় এসেছে।
এলাকা থেকে সরে যাওয়ার একদিন পরে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ডোনেটস্ক অঞ্চল এবং রাশিয়ার মধ্যে সীমান্ত ক্রসিংয়ে শনিবার ৪০ বছর বয়সী সোকেলা এএফপি’র সংবাদদাতাকে বলেন, “আমরা খুব দেরি করতে চাই না, যাতে সময় ফুরিয়ে যায়, এখনই এলাকা থেকে চলে যাওয়া ভালো।”
এলাকা ত্যাগ করার আদেশের পর আভিলা উস্পেঙ্কা চেকপয়েন্টে ভোরের আলোয় রাশিয়ান পতাকা নিয়ে তারের বেড়ার সীমান্ত ডিঙ্গিয়ে লোকদের ওপাশে চলে যাওয়ার অবিরাম প্রবাহ দেখা গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী এলাকার নেতারা নারী ও শিশুদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাশিয়ার পথে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
ইউক্রেইন বলেছে, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত ওই দুই এলাকায় হামলার কোনো পরিকল্পনা এখন তাদের নেই। বিদ্রোহী নেতাদের ভাষ্যকে ‘রাশিয়ার অপপ্রচার’ আখ্যায়িত করেছেন ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুয়েলবা।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দরিদ্র ও শিল্প এলাকা ডোনেটস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল রাশিয়া ও পশ্চিমের কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি লংঘনের পর সরাসরি যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে, সোকেলা নিজেও এই পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন।
নিজের শহর শাখতারস্ক-এ তিনি বলেন, আমরা সব কিছু সুস্পস্ট শুনতে পাচ্ছি, বৃহস্পতিবার সেখানে বিষ্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। ভারি কিছু নিচে নেমে আসছিলো।
শনিবার চেকপয়েন্টে প্রচন্ড শীতের পোাশাক পরা বয়স্ক, মহিলা ও শিশুদের হুইলি ব্যাগ টেনে নিয়ে সীমান্ত পাড় হওয়ার চাপ অব্যাহত ছিল।
সোকেলা তার ১৬ বছর বয়সী ছেলেকে রাশিয়ায় তার দাদীর কাছে রেখে আসার জন্য নিয়ে এসেছে, ছেলেকে সেখানে রেখে নিজে তার নিজ শহরে ফিরে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।
সোকেলা বলেন, “এক সপ্তাহ থেকে ফিরে আসবো, হয়তোবা স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে, এসব বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি।”
সীমান্ত পেরিয়ে আসা লোকদের বহন করার জন্য রাশিয়ার দিকে দশটি খালি স্কুল বাস অপেক্ষা করছিলো, জরুরি মন্ত্রনালয় ১৫টি তাঁবু স্থাপন করে রেখেছে, তবে সেখানে কোন ঘরবাড়ি নেই।
বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০ হাজারের মতো লোক রাশিয়ায় চলে গেছে। এই এলাকায় অনুমিত হিসাবে ৩০ লাখ লোক বাস করে।