
ভাষা শহীদদের প্রতি সর্বস্তরের শ্রদ্ধা
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।
রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাউদ্দিন ইসলাম শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরী।
এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর বাজতে থাকে। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবরা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিন বাহিনীর প্রধান, আইজিপি, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিরোধী দলের পক্ষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, ১৪ দলের পক্ষে ডা. দীপু মনি ও হাসানুল হক ইনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্যবৃন্দ। বিভিন্ন দেশের রাষ্টদূত, এটর্নি জেনারেল আবুল মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষে কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি, ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশনের পক্ষে এসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ, মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ।
ভাষা আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার। তাদের স্মরণেই দেশবাসী এই শহীদ মিনারের সামনে এসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়। শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ছেয়ে যায় মিনারের বেদি।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট আ্যট আর্মস কমডোর মিয়া মোহাম্মদ নাইম রহমান। তবে রাত ১২টার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাসহ সর্বস্তরের মানুষ ভিড় করেন শহীদ মিনার অভিমুখী রাস্তায়।
আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, ডেপুটি স্পিকারের পক্ষে গোলাম শাহরিয়ার তালুকদার, শিক্ষা মন্ত্রণালায়ের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান হাসান চৌধুরী নওফেল, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদের পক্ষে জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুল হক চুন্নু ও অন্যান্য নেতৃবৃ।
এরপরেই রাতেই শ্রদ্ধা জানাতে আগতরা নির্দিষ্ট পথ ধরে ও নির্দেশনা অনুসারে শহীদ মিনার এলাকায় প্রবেশ করেন এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সহযোগী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানায়।