কুমিল্লায় সাংবাদিক নাঈম হত্যায় ঘটনায় মামলা
কুমিল্লায় সংবাদকর্মী মহিউদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ীসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবারে (১৪ এপ্রিল) রাতে নিহত মহিউদ্দিন সরকার নাঈমের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে রাজুকে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে রাজুকে।
রাজু ‘মাদকব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া একাধিক মামলার আসামি বলে জানা গেছে।
মহিউদ্দিনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন সরকার বলেন, আমার ছেলে অনেক মেধাবী ও সাহসী ছিল। মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামে বিকেল সাড়ে ৫টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মহিউদ্দিন একসময় সাংবাদিকতায় সক্রিয় ছিলেন। আনন্দ টিভির উপজেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় কাজ করতেন। হঠাৎ সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন সময় ভারতীয় সীমান্তে মাদক চোরাচালান গোপন তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতেন। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় রাজুর সঙ্গে।
নিহত মহিউদ্দিনের বন্ধু সাংবাদিক মাহফুজ বাবু বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একজন ব্যক্তি মাদকের চোরাচালানের তথ্য দেবে বলে বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদ (নগর) ভারতীয় সীমান্তে নিয়ে যায় তাকে। কৌশলে তাকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে মাদক ব্যবসায়ী রাজু নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। রাজু মাদক ব্যবসার পাশাপাশি ভারত থেকে অবৈধ মোটরসাইকেল নামান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত মহিউদ্দিনের বন্ধু পলাশ জানান, রাত সাড়ে ৯টায় রাজু বাহিনী অস্ত্র নিয়ে এসে সাংবাদিক কই বলে চিৎকার করে। এ সময় মহিউদ্দিনকে তুলে নিয়ে গুলি করে তারা। তখন আমি পালিয়ে যাই। পরবর্তীতে কয়েকটি গুলির শব্দ শুনতে পাই। পরে শুনি মহিউদ্দিনকে মেরে ফেলেছে তারা।
কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক দোলেয়ার হোসেন জাকির বলেন, মহিউদ্দিন হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, বুধবার রাত ১০টার দিকে বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদ নগরে ওই সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়।