চলছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এই সময়ে প্রায় ৮০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়ে।
আর তাই ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে সারাদেশে ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ১৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞার দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে এরই মধ্যে। আর নিষেধাজ্ঞার মাঝেই অভিযানে ধরা পড়া ইলিশের শারীরিক গঠন ও ধরন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য নদীতে এসেছে।
বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মানুষের জন্য যেটা বৈরী আবহাওয়া সেটা ইলিশসহ মাছের জন্য অনেক ভালো। এবারে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য যেমন একটি ভালো সময় ছিল, সামনে অমাবস্যাতেও আবহাওয়া বিরূপ হলে ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য উত্তম সময় হবে।
তিনি বলেন, সারা বছর কিছু ইলিশের পেটে ডিম থাকে এবং সারাবছর জুড়েই ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে। তবে প্রজনন মৌসুমটাতে বেশিরভাগ ইলিশ ডিম ছাড়ে। ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য যে আবহাওয়াটা ভালো হবে, সেইরকম আবহাওয়া থাকলে ৫০-৬০ শতাংশ বা তার বেশি মাছ এ সময়টাতে ডিম ছাড়বে। আর এরই মধ্যে অভিযানে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি প্রচুর মা ইলিশ নদীতে রয়েছে, যার মধ্যে অনেক ইলিশ ডিমও ছেড়েছে। এতে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেও আশা করেন তিনি।
প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বাজারে ডিমওয়ালা ইলিশ পাওয়া যাওয়াটাও স্বাভাবিক বলে জানিয়ে মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, প্রজনন মৌসুমে যে পরিমাণে ডিম ইলিশ ছাড়বে তাতে যে মাছ উৎপাদন হবে তাতেই দেশে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
এদিকে বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বিভাগের ছয় জেলার ৪২ টি উপজেলায় তিন লাখ ১৯ হাজার ৮৩০ জেলে পরিবারের জন্য চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। আর গত ১৪ দিনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করায় ৩৪৯ জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ১৮ লাখ ৯২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযানে ১৩ হাজার ৬৮ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে।