গত বছরের ৫ আগস্টের আন্দোলনের চাপের মুখে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তার দিল্লিতে অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়ায়। তবে সম্প্রতি একটি বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নয়াদিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো এলাকায় একটি বাড়িতে বসবাস করছেন শেখ হাসিনা।
তবে এই এলাকায়, হাসিনার বাড়ির কাছেই, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের (সিআরআই) একটি দোতলা অফিস রয়েছে। এটি দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের ‘গুজব তৈরির কারখানা’ হিসেবে পরিচিত।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০১০ সালে সিআরআই কার্যক্রম শুরু করে। মূলত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে প্রতিষ্ঠানটির অফিস থাকলেও তাদের কাজ গোপন জায়গা থেকে পরিচালিত হতো।
ভারত থেকে পরিচালিত এই সিআরআইয়ের প্রধান লক্ষ্য তিনটি:
১) অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা,
২) জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অবস্থা নষ্ট করা,
৩) বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বিরুদ্ধে জনমত গঠন ও বিভিন্ন গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা।
গত তিন মাস ধরে পুনরায় সক্রিয় হয়েছে সিআরআই। এর আগে এর দায়িত্বে ছিলেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা ভার গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, যিনি নিয়মিত দিল্লির এই অফিসে কাজ করছেন।
আইনগত কারণে জয় অফিসিয়ালি সিআরআই পরিচালনা করতে না পারায় পুতুলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সিআরআই শুধুমাত্র গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহের কাজ নয়, বরং এটি এখন শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর লক্ষ্যে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ নামে সংগঠন গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দিল্লির এই কার্যালয় থেকে বিভিন্ন কৌশলে এসব গ্রুপকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করা হচ্ছে।
এর উদ্দেশ্য হলো সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ বাড়ানো, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা, শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা বৃদ্ধি করে দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং শেষে আওয়ামী লীগের সব শক্তিকে প্রকাশ্যে আনা। পরবর্তীতে ঢাকা অ্যাটাক বা যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
সূত্র: যুগান্তর