দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে যেন একপ্রকার ডমিনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে। নেপালে জেনারেশন জেড তরুণদের আন্দোলনের রেশ না কাটতেই, এবার প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিহার রাজ্যে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদ কমানোর প্রতিবাদে হাজারো চাকরিপ্রত্যাশী রাজপথে নেমেছেন, যার ফলে পাটনার প্রধান সড়কগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো চতুর্থ দফা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (TRE-4)। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার আগের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে শূন্যপদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই প্রায় তিন হাজার তরুণ পাটনা কলেজ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনের উদ্দেশ্যে মিছিল শুরু করেন। কেতন মার্কেট, বকরগঞ্জ, গান্ধী ময়দান ও ডাকবাংলো স্কয়ার হয়ে মিছিল শহরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
তাদের দাবি, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী সুনীল কুমার ঘোষণা দেন, এবারের নিয়োগে মাত্র ২৬ হাজারের কিছু বেশি পদ থাকবে। এই ঘোষণায় চাকরিপ্রত্যাশীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রনেতা দিলীপ কুমার অভিযোগ করেন, ডোমিসাইল নীতি চালু হওয়ার আগে সরকার বিভিন্ন সময় ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ ২০ হাজার পর্যন্ত শূন্যপদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ২৭ হাজার ৯১০-এ, যা তরুণদের সঙ্গে “বিশ্বাসঘাতকতা” বলে মনে করছেন তিনি।
তার মতে, বাইরের রাজ্যের প্রার্থীদের টানতেই আগে বেশি শূন্যপদের কথা বলা হয়েছিল, আর এখন স্থানীয়দের জন্য সুযোগ রেখে সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে তরুণদের মধ্যে হতাশা ও সরকারের প্রতি অনাস্থা বাড়ছে।
আন্দোলনকারীরা আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী একাধিকবার ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
আগামী বিধানসভা নির্বাচন সামনে থাকায় এই ইস্যু রাজনীতিতে আরও উত্তাপ ছড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন— পূর্ণ শূন্যপদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করা হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে।
সূত্র: ফ্রি প্রেস জার্নাল