কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুলিশের হাত থেকে হাতকড়াসহ ধর্ষণ মামলার এক আসামি পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ধনারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি, আসামিকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরানোর পর তার পরিবারের লোকজন রৌমারী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ওপর হামলা করেন। এ সময় হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় আসামি। আহত এসআইয়ের নাম আউয়াল হোসেন। তাকে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হাতকড়াসহ পালাতক আসামির নাম শাহনেওয়াজ আবির রাজু (৩০)। তিনি যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারসহ স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগও রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসামি শাহনেওয়াজ আবির রাজুর বিরুদ্ধে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এক প্রতিবন্ধী স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর গ্রামবাসীর তোপের মুখে অভিযুক্ত রাজু পরিবারসহ নিজ গ্রাম ছেড়ে ধনারচর চরেরগ্রামে তার খালা ও সাবেক নারী ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থীর পরিবার পুলিশে অভিযোগ দেয়। ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে স্থানীয়দের ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে রাজুকে গ্রেফতার করতে সোমবার রাতে এসআই আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল সাবেক ওই ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে অভিযানে যায়।
তল্লাশি চালিয়ে কয়েক পিস ইয়াবাসহ রাজুকে আটক করে হাতকড়া পরায় পুলিশ। এ সময় রাজু, তার মা এবং খালাতো বোন (শিরিনার মেয়ে) পুলিশের ওপর হামলা করে। এসআই আউয়ালের হাতে কামড় দেয় এবং তার অণ্ডকোষে আঘাত করে। সুযোগ পেয়ে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় রাজু। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আউয়ালকে উদ্ধার করে। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে রাজুর মা আবেদা আক্তার রাজিয়া (৪৮) এবং খালাতো বোন রুনা আক্তারকে (২৩) আটক করে থানায় নেয়া হয়। এ সময় ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মাদক ও দেশীয় রাম দা উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, ‘সোমবার রাতে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশকে আঘাত করে আসামি রাজু হাতকড়াসহ পালিয়েছে।’
রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. নবিউল ইসলাম বলেন, ‘ একজন পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর নয়।’
রৌমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় ধর্ষণ মামলার আসামি। পরে পুলিশের অভিযানে হাতকড়া উদ্ধার হলেও, আসামিকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।