যুক্তরাজ্যের বাড়ির দাম টানা পঞ্চম মাসের মতো বেড়েছে, তবে বাজারের গতি কিছুটা শ্লথ হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনওয়াইড।
ন্যাশনওয়াইডের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে বাড়ির দাম আগের মাসের তুলনায় ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ডিসেম্বরে ছিল ০.৭% এবং নভেম্বরে ১.২%। এর ফলে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে গড় বাড়ির মূল্য দাঁড়িয়েছে £২৬৮,২১৩। তবে বার্ষিক ভিত্তিতে দাম বৃদ্ধির হার কমে ৪.১%-এ নেমেছে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪.৭%।
ন্যাশনওয়াইডের প্রধান অর্থনীতিবিদ রবার্ট গার্ডনার বলেন, “বাড়ির বাজার এখনো স্থিতিশীল থাকলেও ক্রয়ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। সামান্য উন্নতি হলেও ঐতিহাসিক মান অনুসারে অনেকের জন্য বাড়ি কেনা এখনো চ্যালেঞ্জিং।”
অন্যদিকে, লন্ডনের এস্টেট এজেন্সি ফক্সটনস জানিয়েছে, বর্তমানে রাজধানীর সম্পত্তি বিক্রির হার প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে এবং প্রথম প্রান্তিকে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৩১ মার্চ থেকে ইংল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে স্ট্যাম্প শুল্কের নিয়ম পরিবর্তন হতে চলেছে। ফলে ক্রেতারা অতিরিক্ত কর এড়াতে দ্রুত ক্রয় সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন, যা বাজারে অস্থায়ীভাবে চাহিদা বাড়িয়ে তুলেছে।
২০২২ সালে ব্রিটিশ সরকার অস্থায়ীভাবে স্ট্যাম্প শুল্কের শূন্য হার বাড়িয়ে প্রথমবারের ক্রেতাদের জন্য £৩০০,০০০ থেকে £৪২৫,০০০ এবং অন্যান্য বাড়ির জন্য £১২৫,০০০ থেকে £২৫০,০০০ করেছিল। তবে অক্টোবরে বাজেট ঘোষণায় বলা হয়, এই সুবিধা ৩১ মার্চ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
কুইল্টারের বন্ধকী বিশেষজ্ঞ ক্যারেন নয়ে বলেন, “অনেক প্রথমবারের ক্রেতা এখন চুক্তি সম্পন্ন করতে লড়াই করছেন, তবে অনেকের জন্য হয়তো সময় শেষ হয়ে গেছে।”
ন্যাশনওয়াইডের সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের গড় আয়ের ব্যক্তিদের জন্য প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে। গড় আয়ের একজন ব্যক্তি যদি ২০% আমানত দিয়ে বাড়ি কিনতে চান, তাহলে তার মাসিক বন্ধকী পরিশোধ হবে তার আয়্যের ৩৬%, যা ঐতিহাসিক গড়ের তুলনায় বেশি (৩০%)।
ফাইন অ্যান্ড কান্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জোনাথন হ্যান্ডফোর্ড মনে করেন, “এই বছর বাজার স্থিতিশীল থাকবে কি না, তা নির্ভর করছে প্রথমবারের ক্রেতাদের ওপর। তবে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড যদি সুদের হার কমায়, তাহলে বাজার চাঙ্গা হতে পারে।”
জানুয়ারিতে বাড়ির দামে সামান্য বৃদ্ধি বাজারের স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিলেও মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রয়ক্ষমতার চ্যালেঞ্জ ভবিষ্যতে এর গতি কতটা ধরে রাখতে পারবে, তা এখনো প্রশ্নসাপেক্ষ।
হ্যান্ডফোর্ড বলেন, “আগামী কয়েক মাসেই বোঝা যাবে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে নাকি মুদ্রাস্ফীতি ও ক্রয়ক্ষমতার সংকট বাজারে প্রভাব ফেলবে।