নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার নতুন এক সিভিল সার্ভিস ইন্টার্নশিপ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। হোয়াইটহলে বৈচিত্র্য বাড়াতে এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এই দুই মাসব্যাপী বেতনভুক্ত ইন্টার্নশিপ কর্মসূচি ২০২৬ সাল থেকে চালু হবে, যেখানে ২০০ জন স্নাতক শিক্ষার্থীকে সরকারি বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী অক্টোবর থেকে।
কী কী কাজের সুযোগ থাকছে
ইন্টার্নশিপ চলাকালীন শিক্ষার্থীরা সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্যক্রমে সরাসরি অংশ নিতে পারবেন। কাজের পরিধির মধ্যে থাকবে ইভেন্ট পরিকল্পনা, মন্ত্রীদের জন্য ব্রিফিং প্রস্তুত করা, নীতির ওপর গবেষণা এবং সিনিয়র সিভিল সার্ভেন্টদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা।
এই স্কিমে সফল অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে সিভিল সার্ভিস ফাস্ট স্ট্রিম প্রোগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে সরাসরি প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
কর্মজীবী শ্রেণি কীভাবে নির্ধারিত হবে
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের মানদণ্ড অনুসারে, কর্মজীবী শ্রেণির সংজ্ঞা নির্ধারিত হবে আবেদনকারীর ১৪ বছর বয়সে পরিবারের প্রধান উপার্জনকারীর পেশা অনুযায়ী। যেমন—রিসেপশনিস্ট, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার বা ভ্যান ড্রাইভার হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে কর্মজীবী শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ধরা হবে।
সরকার ও সমাজের প্রতিক্রিয়া
ক্যাবিনেট অফিসের মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন বলেন, “সরকার তখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যখন এটি তাদের প্রতিনিধিত্ব করে যাদের জন্য কাজ করে। এই স্কিমের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে তরুণদের হোয়াইটহলের কেন্দ্রে নেতৃত্বের সুযোগ দেওয়া হবে।”
সোশ্যাল মোবিলিটি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সারা অ্যাটকিনসন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “প্রতিভা সর্বত্র আছে, কিন্তু সুযোগ নয়। কখনো কখনো সেই সুযোগ তৈরিতে সাহসী পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
FDA (সিভিল সার্ভিস কর্মীদের ইউনিয়ন) মহাসচিব ডেভ পেনম্যান স্কিমটির প্রশংসা করলেও কর্মজীবী শ্রেণির ক্যারিয়ার উন্নয়নে আরও গভীর পরিকল্পনার আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
তবে কনজারভেটিভ পার্টি এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছে। দলটির নেত্রী কেমি বাডেনক মন্তব্য করেন, “আমার নেতৃত্বে কনজারভেটিভ সরকার এই ধরনের নীতিকে বাতিল করবে এবং নিয়োগ শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে।”
সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, আগামী বছরগুলোতে সিভিল সার্ভিসের আকার ধীরে ধীরে কমানো হবে। বর্তমানে খাতে কর্মরতদের সংখ্যা প্রায় ৫,৫০,০০০, যা দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সীমিত আকারে চালু হলেও এই ইন্টার্নশিপ স্কিম নিম্ন আয়ের তরুণদের জন্য সরকারি নীতিনির্ধারণের কেন্দ্রে প্রবেশের এক অনন্য দ্বার উন্মোচন করছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান