বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক উজ্জ্বলতম নাম সালমান শাহ। আজ ৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুবার্ষিকী—এ দিনে তাকে হারানোর ২৯ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৯৬ সালের এই দিনে মাত্র ২৫ বছর বয়সে ঢাকার ইস্কাটনের নিজ বাসায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
মাত্র তিন বছরের স্বল্প সময়ের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে সালমান শাহ অভিনয় করেন ২৭টি সিনেমায়। কিন্তু এতেই তিনি বাংলা সিনেমায় আধুনিকতার এক নতুন ধারার সূচনা করেন—স্টাইল, ফ্যাশন আর রোমান্সে এনে দেন এক অনন্য আবেদন। সে কারণেই ভক্তদের কাছে তিনি চিরকাল ‘স্বপ্নের নায়ক’ হিসেবে পরিচিত।
তার মৃত্যু নিয়ে আজও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। পুলিশের তদন্তে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও সালমান শাহ’র পরিবার ও অসংখ্য ভক্ত এই ব্যাখ্যায় কখনওই সন্তুষ্ট হননি। বরং তাদের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আজও উন্মোচিত হয়নি।
সালমান শাহ ছিলেন সময়ের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকা একজন অভিনেতা। তার স্টাইল, ফ্যাশন ও উপস্থিতি তরুণ প্রজন্মের কাছে একসময় আদর্শ হয়ে উঠেছিল। এমনকি বলিউড থেকেও কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন, কিন্তু কাজ করেননি।
শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন নামে জন্ম নেওয়া সালমান অভিনয় শুরু করেন শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘পাথর সময়’-এ অভিনয় করেন। বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে ১৯৯৩ সালে, সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রে, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন মৌসুমী। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন সালমান। এরপর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলা সিনেমার যুবরাজ।
সালমান শাহ নেই—তবুও আছেন। তার স্টাইল, সংলাপ, অভিনয় এখনও তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত তার ছবি, ভিডিও ও ডায়ালগ ভাইরাল হয়। প্রতি বছর মৃত্যুদিনে তাকে ঘিরে তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ।
আজ ২৯ বছর পরও যেভাবে মানুষ তাকে স্মরণ করে, তাতেই প্রমাণ হয়—সালমান শাহ আজও একজন ‘স্বপ্নের নায়ক’, এবং চিরকাল তাই-ই থাকবেন।