বেশ কিছুদিন ধরেই সিলেট মহানগর বিএনপি’র কমিটি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিলো। এরমধ্যে নাসিম হোসেইনকে সরানো হল। তার জায়গায় আনা হলো বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদে ঠাঁই পাওয়া মিফতাহ সিদ্দিকীকে। এমন ঘটনা বিএনপি’র কমিটিতে খুব একটা দেখা যায় না। এরপর নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মিফতাহ সিদ্দিকীই হচ্ছেন সিলেট মহানগর বিএনপির কান্ডারি। অবশেষে সেটি হয়নি। অনেকটা চমক নিয়েই মহানগর বিএনপিতে হাজির হলেন একাধিকবারের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। আন্দোলন সংগ্রামের সময় নগরীর কোর্টপয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিলো পুলিশ। পরে ৫ আগস্ট রাতে তিনি মুক্তি পান। বিভিন্ন সময়ের দলের দুর্দিনে ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই নেতা। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তিনি দলীয় নির্দেশ মেনে নির্বাচনে অংশ নেননি। দল কয়েস লোদী এই ত্যাগের মূল্যায়ন করেছে। সোমবার বিকেলে তিনি একাত্তরের কথা’র কাছে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে, সবার মতামতের ভিত্তিতেই তিনি সিলেট মহানগর বিএনপিকে সাজাবেন।
সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করে মোট ১৭০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা ঘোষণা করেন। কাউন্সিলের ২০ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরিবর্তন আনা হয়েছে সভাপতি পদে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। তবে চলতি বছরের শুরুতে নাসিম হোসাইন বিদেশ চলে যাওয়ায় ১ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মিফতাহ সিদ্দিকীকে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এখন আবার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হলো। কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ২০ জন। তারা হলেন- ডা. নাজমুল ইসলাম, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, সৈয়দ মিসবাহ্ উদ্দিন, সৈয়দ মইন উদ্দিন সুহেল, জিয়াউল হক জিয়া, সুদিপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, মাহবুব কাদির শাহী, আমির হোসেন, অ্যাডভোকেট শাহ্ আশরাফুল ইসলাম, সাদিকুর রহমান সাদিক, নিগার সুলতানা ডেইজী, ডা. আশরাফ আলী, নুরুল মুমিন খোকন, আব্দুল হাকিম, আফজাল হোসেন, ব্যারিস্টার রিয়াসত আজিম হক আদনান, রহিম মল্লিক, মুফতি নেহাল, জাহাঙ্গীর আলম ও মোতাহির আলী মাখন।
কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন ১৫ জন। তারা হলেন- নজিবুর রহমান নজিব, মুর্শেদ আহমদ মুকুল, শামীম মজুমদার, মির্জা বেলায়াত হোসেন লিটন, নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শুয়াইব আহমদ শোয়েব, আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, রেজাউল করিম আলো, আক্তার রশিদ চৌধুরী, আহমদ মনজুরুল হাসান মঞ্জু, মতিউল বারী খোরশেদ, ফাতেমা আমান রোজী, নাদির খান ও আবুল কালাম।
সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন- সৈয়দ সাফেক মাহবুব, জাকির হোসেন মজুমদার, রফিকুল ইসলাম রফিক, দেওয়ান জাকির, খসরুজ্জামান খসরু।
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন- রহিম আলী রাসু, রেজাউর রহমান রুজল, সাব্বির আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম জীবন ও সফিক নূর।
এছাড়া অর্থ-সম্পাদক এনামুল কুদ্দুস, সহ-অর্থ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মোহন, সহ-প্রচার সম্পাদক আলী হায়দার মজনু, দপ্তর সম্পাদক তারেক আহমদ খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ মিলন, সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মারুফ আহমদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল ফজল, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এজাজ আহমদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান হিরু, সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালিক সেকু, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. এম এ হক বাবুল, সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ লোকমান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মির্জা সম্রাট, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক রুবেল বক্স। স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আফছর খান, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সেলিম আহমদ মাহমুদ, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শেখ কবির আহমদ, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজ পাঠান, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুদিপ জ্যোতি এষ, সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম জুনাক, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল মুনিম, সহ-অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রানা, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান আরাফাত জাকি, সহ-প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আহমদ খুশু, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক ফয়েজ আহমদ মুরাদ, সহ-যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক কয়েছ আহমদ সাগর, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাহির, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক কামাল আহমদ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক সবুর আহমদ, সহ-জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক আবু সাইদ মোহাম্মদ তায়েফ, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমদ, সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তারেক আহমদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তাজ উদ্দিন মাসুম, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন শামীম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রীনা আক্তার, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রেহানা ফারুক শিরিন, পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, সহ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ রাজন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমদ, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মুনিম, সহ-শিল্প বিষয়ক সম্পাদক জমজম বাদশা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. লুৎফুর রহমান মোহন, সহ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলী আমজাদ, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাদী মাসুম, সহ-সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন শামীম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ লোকমানুজ্জামান, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুচিত্র চৌধুরী বাবলু, ক্ষুদ্র কুটি শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মিজান আহমদ, সহ-ক্ষুদ্র কুটি শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর রাসেল, শ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আহাদ, সহ-শ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক খোকন ইসলাম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মফিজুর রহমান জুবেদ, সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজিব কুমার দে, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুফতি রায়হান উদ্দিন, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শাহীন আহমদ, পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিব আহমদ, সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল কামাল, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আজিজ লাকী, সহ-তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সালেহ আহমদ গেদা, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সায়েম, মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক দুলাল আহমদ, সহ মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক শাহীন আহমদ, শিশু বিষয়ক সম্পাদক সাদিয়া খাতুন মনি, সহ-শিশু বিষয়ক সম্পাদক বিলকিস জাহান চৌধুরী, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক খায়েরুল ইসলাম খায়ের এবং সহ-স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
কমিটিতে সম্মানিত সদস্য করা হয় ১১জনকে। তারা হলেন- খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, ডা. এনামুল হক চৌধুরী, মিফতাহ্ সিদ্দিকী, আব্দুর রাজ্জাক, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংঙ্কী, বদরুজ্জামান সেলিম, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, হুমায়ূন কবির শাহিন, বদরুদ্দোজা বদর ও মোকবুল হোসেন।
সদস্য হিসেবে রয়েছেন ৪২ জন। তারা হলেন- লুৎফুর রহমান চৌধুরী, মুহিবুর রহমান, লল্লিক আহমদ চৌধুরী, মো. জমির উদ্দিন, বজলুর রহমান ফয়েজ, আলী আকবর ফকির, ওলিউর রহমান ডেনি, মন্তাজ মিয়া, সেলিম আহমদ শেলু, রানা মিয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন, সিরাজ খান, আলী আহমদ, রাজন মিয়া, পিয়ার উদ্দিন পিয়ার, আসমা আলম, ফখর উদ্দিন আহমদ (পংকি), মোহাম্মদ মকসুদ, সুহেল আহমদ, চান মিয়া বাচ্চু, শাহজাহান আহমদ, রাসেল আহমদ খান, মিনারা বেগম, সালেক আহমদ, মঈন খান, সাইফুল ইসলাম, নুরুল হক রাজু, মতিউর রহমান শিমুল, ইফতেখার আহমদ পাবেল, ফরহাদ আহমদ, আব্দুল মুমিন, আব্দুল মুমিন মামুন, জাহেদ আহমদ, আকবর হোসেন কায়ছার, শহিদুর রহমান সানি, শফিকুর রহমান সুমন, রিয়াজ আহমদ সুমন, মো. হারুনুর রশিদ, নুরুল ইসলাম লিমন, জাকারিয়া খান, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও জাকির হোসেন পারভেজ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের কাউন্সিলে সভাপতি পদে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন ১ হাজার ৬৬টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মহানগর বিএনপির সাবেক (কাউন্সিলের আগের) আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) মিফতাহ সিদ্দিকী পেয়েছিলেন ৭৬৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ১ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফরহাদ চৌধুরী শামীম পান ৭৭২ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রদল নেতা সৈয়দ সাফেক মাহবুব ৬৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেজাউল করিম নাচন পান ৬২৩ ভোট।