সারাদেশের মতো সিলেটেও বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, যা সিলেটের যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মধ্যে ফেলেছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন এক প্রকার জনশূন্য হয়ে পড়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা থাকলেও, কোনো ট্রেনই ছাড়তে দেখা যায়নি। একইভাবে ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, সুরমা মেইল এবং উদয়ন এক্সপ্রেসও বন্ধ রয়েছে। ফলে অনেক যাত্রী স্টেশনে এসে অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
কিছু যাত্রী বাসকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ঘোষিত বিআরটিসি বাস সেবার কার্যকারিতা তেমন দেখা যায়নি। সকাল ১১টা পর্যন্ত সিলেট স্টেশন থেকে বিআরটিসি বাসে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়নি।
চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের টিকিট কাটা শিক্ষার্থী শাওন জানান, ট্রেন বন্ধ থাকার কথা জেনে স্টেশনে এলেও, ট্রেন চালুর কোনো সম্ভাবনা নেই জেনে তাকে ফিরে যেতে হয়েছে। অন্যদিকে, পরিবারসহ ট্রেনে ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে আসা মেজরটিলার রুহুল আমিন বলেন, “স্টেশনে এসে ট্রেন বন্ধ থাকার কথা জেনেছি। এখন পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছি।”
ঢাকাগামী যাত্রী হাসিব মিয়া অভিযোগ করেন, “কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই এই কর্মসূচি দেওয়া ঠিক হয়নি। যাত্রীদের এমন ভোগান্তির শিকার হওয়া উচিত নয়।”
রানিং স্টাফদের দাবি, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন সুবিধাসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি দীর্ঘদিনেও পূরণ হয়নি। এই রানিং স্টাফদের মধ্যে আছেন ট্রেনচালক, সহকারী চালক, গার্ড এবং টিকিট পরিদর্শকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রানিং স্টাফদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে বিআরটিসি বাস চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলের টিকিট দেখিয়ে এই বাস সেবা গ্রহণ করা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত সিলেট স্টেশনে এ সেবা চালু হয়নি।
রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, “যখনই নির্দেশনা আসবে, তখনই ট্রেন চলাচল শুরু হবে। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলোর টিকিট রিফান্ড করা হচ্ছে।”
রানিং স্টাফদের এই কর্মবিরতির কারণে সিলেটের ট্রেন যাত্রীরা যেমন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তেমনই তাদের দাবিগুলোও আলোচনায় এসেছে। এখন দেখার বিষয়, কত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়।